সাজুগুজু করে রাস্তায় বের হৈলা

সাজুগুজু করে রাস্তায় বের হৈলা, আর পাবলিক ফিসফিসিয়ে বল্ল, বিউটিফুল!
বিরক্ত হয়ে তুমিয়ো বললা, ইডিয়ট।
খুব সুন্দর করে সাজুগুজু করে আকর্ষণীয় পোজ দিয়ে ফটো তুলে ফেবুতে আপলোড দিলা, পাবলিক কমেন্ট করল, খুব সুন্দর।
তুমি মুচকি হাসির ইমো দিয়ে পাল্টা কমেন্ট করলা, থ্যাংকু।!!

প্রথমটা এনালগ টাইপ, পরেরটা ডিজিটাল!!!

আরে বৈন, বুঝ বোঝার চেষ্টা কর, রিয়েল লাইফে শুধু কমেন্ট শোন। কিন্তু ভার্চুয়াল লাইফে কমেন্টের পাশাপাশি তোমার ফটোর বহু কাহিনী করা হয়, কখনো তোমাকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতেও সাহায্য করে!!

-- সারাহ রুবাইয়া

পর্দাহীন নারীর ফটোতে পুরুষের লাইক/কমেন্ট দেয়ার যুক্তি কি?

একজন বেগানা নারী যে হয়ত অজ্ঞতাবশতঃ নিজের বেপর্দা কিংবা পর্দাসহকারে ছবি আপলোড করল কিন্তু তাতে কি একজন মুসলিম ভাইয়ের লাইক আর কমেন্ট দেয়ার যৌক্তিকতা আছে? ওখানে মাশাআল্লাহ লিখা আর লাইক দেয়া কি 'আমর বিল মারুফ' নাকি 'নাহি আনিল মুনকার'?

-- সায়্যিদ মাহমুদ গজনবী

চলে গেছ তাতে কি নতুন একটা পেয়েছি

একদিন অনেক রাতে ক্যাম্পাসে মোবাইলে ওয়াইফাই চালাইতেছি দেখি মধুর ক্যান্টিনের ওদিক থেকে একটা বাইকে করে একটা ছেলে আর মেয়ে হৈ হৈ করতে করতে আসছে। মেয়েটা চিৎকার করে গাইছে, "চলে গেছ তাতে কি নতুন একটা পেয়েছি… তোমার চেয়ে অনেক ভাল"।

ঠিক একই জায়গায় আরেক রাতে এক ছেলের কাঁধে মাথা রেখে এক মেয়ে বসে আছে। মেয়েটির ফোন বেজে উঠল। হয়ত তার মা, হয়ত বাবা ফোন করেছিল। এপাশের কথা শোনে অপাশের প্রশ্নগুলো বুঝে নিলাম, "কোথায়?" "এই তো রুমে" "কি করছ?" "নুডুলস বানাচ্ছি!!" আদরের মেয়ে এত রাতে এক পরপুরুষের গা জড়াজড়ি করে বসে আছে এর বদলে "নুডুলস বানাচ্ছে" এই সান্ত্বনায় বাবা মা হয়ত সেদিন আরামেই ঘুমোতে গেছে প্রতিদিন যেমন যায়।

ক্যাম্পাসে কোন এমারজেন্সি কারনে যদি রাতে বের হতে হয় কলাভবনের সামনে দিয়ে, বটতলা, আমতলা ওদিকে কখনো যাইনা। কেমন জানি লাগে। ওরা খারাপ আমি ভাল, ওরা কুকাম করছে আমি নিষ্পাপ ব্যাপারটা এমন নয়। আমার কেবলই মনে হয় এই ছেলে মেয়েগুলো হয়ত আপনার আমার আদরের ভাইটি নয়, আদরের বোনটি নয় কিন্তু কারো না কারো তো বোন, কারো না কারো তো ভাই। এরাও তো কোন না কোন দুর্ভাগা বাবা মায়ের সন্তান। দিনের পর দিন এরা নিজেদের সাথে নিজেদের বাবা মায়েদেরও দুর্ভাগা করে। ছোট বেলা থেকে ওটা কর না, এটা করোনা, ওখানে যাবেনা, এখানে এমন করবে টাইপ কারণহীন, যুক্তিহীন শাসনে বড় হওয়া ছেলেমেয়েগুলো যখন ছাড়া পেয়ে দেশের বিদ্যাপীঠগুলোতে আসে এদের অবস্থা হয়ে যায় বাধা গরু হঠাৎ ছাড়া পাওয়ার মত। মন যা চায় তাই করতে যাওয়া এই ছেলে মেয়েগুলোর প্রতিটি কুকামের পেছনে আছে বাবা মায়েদের মূল্যবোধহীন, নৈতিকতাহীন, জীবনবোধহীন "তোকে জীবনে অনেক বড় হতে হবে" এই সেকুলার হলফনামার মুখস্থ পাঠ।

-- অবুঝ বালক

কাছে আসার গল্প

চারিদিকে এত 'কাছে আসার গল্প'... আহা। এত প্রেম কোথায় রাখি?

আরো একটি কাছে আসার গল্প শুনি আমরা।

ছেলেটা প্রতি ওয়াক্ত সালাতে হাত তুলে একজন পবিত্রা মুসলিমাহকে জীবন সাথী হিসেবে পাওয়ার জন্যে আল্লাহকে বলতো...

মেয়েটাও জায়নামাযে বসে দু হাত তুলে এমন একজনকে খুঁজতো, যাকে দেখলে সে যেন চোখের সামনে জান্নাত দেখতে পায়...

দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর... কত ধৈর্য, সাবর আর অপেক্ষা... নফসকে নিয়ন্ত্রণ, চরিত্রের হিফাজাত... শুধুই আল্লাহর কাছে চাওয়া...

এবং অবশেষে আল্লাহ তাদের সত্যিই মিলিয়ে দিলেন।

এভাবেই শুরু হল তাদের জান্নাতে যাওয়ার গল্প।

সবার কাহিনী যেখানে শেষ, তাদের কাহিনী সেখান থেকেই শুরু...

-- নাজমুস সাকিব

ঘরে বসে থাকা নারী?

​​
রাস্তার এখানে সেখানে বিভিন্ন খাবারের দোকান দেখা যায়। কেউ বিক্রি করে পুরি-সিঙ্গারা, কেউ ভাত-তেহারী-কাচ্চি প্রভৃতি।

কাল এমনই এক দোকানে বসে দেখছিলাম দোকানের লোকগুলো কত কসরত-কায়দা করে খাবার তৈরি করে। এরপর সেই খাবার বেচে টাকা নেয়। এটাই তাদের কাজ। এটাই তাদের পেশা।

মনে হল আমার মা, আমার বোনও বাড়িতে খাবার রান্না করেন। মা আমাদের জন্য, বোন তার বাড়িতে স্বামীর জন্য। তবে রোকেয়া প্রাচীদের ভাষায় আমার মা-বোনদের এই খাবার তৈরি কোন "কাজ" নয়, এটা হল "ঘরে বসে থাকা।"

দর্জিরা রাস্তার মোড়ে বসে কাপড় সেলাই করলে কাজ, এই সেলাইয়ের কাজ মা-বোনেরা ঘরে করলে নাকি "চার দেয়ালের বন্দীত্ব", যা জাফর ইকবালদের আফগানিস্তানের স্মরণ করিয়ে দেয়। উনারা ফাঁক পেলেই বুলি ছাড়েন।

কেন? কারণ বাইরে কাজ করে পয়সা পাওয়া যায়, ঘরে করলে পাওয়া যায় না। পয়সা না পেলে "কাজ" হয় না, হয় "ঘরে আটকে থাকা।" টাকা ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে মানুষ শ্রম দিতে পারে, একথা মস্তিষ্কে ধারনের ক্ষমতা প্রগতিশীলদের নেই।

আমরা মুসলিমদের সবচেয়ে বড় গর্বের জায়গাটা হল, আমরা এক আল্লাহ্‌কে ইলাহ মানি। আর কারো গোলামি করি না। টাকার গোলামি করি না। লোকের দেখনদারিত্বের গোলামি করি না। আমাদের মা-বোনেরা দায়িত্বের কথা ভেবে কাজ করেন। তাঁরা জানেন বাইরের মানুষ অপেক্ষা ঘরের মানুষ তাঁদের সেবার বেশি হকদার। তাঁরা কাজ করেন হক্ব পূরণে। নিঃস্বার্থভাবে। সুশীলরা তা মেনে নিতে পারে না। আল্লাহভীরু মুসলিমাহদের দর্শন যে তাদের বস্তুবাদী চিন্তাধারার পশ্চাদ্দেশ্যে চপেটাঘাত করে !

নারী স্বাধীনতার স্বরূপ আমরা জানি। হিজাব পরিহিতা নারী দেখলে জাফর ইকবালদের হৃদয়ের হাহাকারের উৎস আমরা বুঝি। মারিয়া শারাপোভাদের জনপ্রিয়তার মূলে খেলা না অন্য কিছু-তাও আমরা জানি। ফিমেল প্লেয়ারদের পোশাকের দৈর্ঘ্য কেন ছেলেদের চেয়ে কম হবে-এই প্রশ্ন করে আমরা মৌলবাদী বনি। মোবাইল অপারেটরের হেল্পলাইনে কেন ফিমেল কণ্ঠ দিতে হয়-আমরা বুঝি। নারীকণ্ঠকে পুঁজি করে ফিমেল নিউজ প্রেজেন্টারের আধিক্যের হেতু বোঝা যায় বেশ, তাদের পোশাক কী হবে, সেটাও ঠিক করে দেয় চ্যনেলের পুরুষ ম্যানেজার। এটাই নাকি নারীর স্বাধীনতা।

ধিক সেই সুশীলদের, যারা আমাদের সম্মানিত নারীদের আল্লাহ্‌র গোলাম থেকে টাকার গোলাম বানিয়ে ছেড়েছে। তবে সত্যিকারের মু'মিন নারীরা চিরকালই তাদের চেতনায় মুগুড়ের আঘাত হেনে আসছেন। স্যালুট টু দেম। আল্লাহু আকবার।

-- জুবায়ের হোসেইন 

নারী অধিকারকর্মীরা স্বেচ্ছায় এখন অসভ্য বর্বর মধ্যযুগীয়ভাবে অবরোধবাসিনী হয়ে উঠবেন

শীত আসছে...

প্রগতিশীল নারী অধিকারকর্মীরা স্বেচ্ছায় এখন অসভ্য বর্বর মধ্যযুগীয়ভাবে অবরোধবাসিনী হয়ে উঠবেন। সারা বছর নারীমুক্তি আন্দোলনের পতাকাবাহীরা এখন স্বেচ্ছায় নিজেরাই বন্দিত্ব বরণ করবেন। তারা হয়ে উঠবেন মৌলবাদী, ধর্মান্ধ।

যেই শীতের ভয়ে তাদের এই বিস্ময়কর মানষিক অবনতি, উত্তরবংগ ছাড়া দেশের বেশির ভাগ জেলাতেই সেই শীতে সামান্য সর্দি কাশি বা বড়জোর জ্বর ছাড়া আর কিছু হয় না। অথচ বছরের বাকি সময়টাতে তারা যখন তারস্বরে হিজাবের বিরুদ্ধে শ্লোগান তোলেন তখন তাদের অনন্তকালব্যাপী চামড়া ভেদ করে অন্তর পর্যন্ত ঝলসে দেয়া আগুনের কথা মনে থাকে না।

কী যে বিচিত্র মানুষের মন! আল্লাহ আমাদের এমন অদ্ভুত বৈচিত্র্য ও তার নির্দেশের অমান্যকারী মন থেকে হেফাযত করুন। আমীন।

-- ফারিহা রহমান