সপ্তাহ খানেক আগের ঘটনা। একটা কাজে বনানী যাওয়া দরকার ছিল।যেহেতু হরতাল ছিল, গাড়ি বের না করে বাসেই যাওয়া মনঃস্থির করলাম। বাসে উঠে পিছন দিকের একটি সিট খালি আছে দেখতে পেয়ে সেদিকে এগুলাম। যেতে যেতে আমার সিটের ঠিক আগের সিটেই একটা ছেলে ও একটা মেয়েকে দেখে চোখ আটকে গেল। কারন ছিল তাদের অস্বাভাবিক কার্যকলাপ। অসম্ভব দৃষ্টিকটু ছিলো ব্যাপারটি। সিটে বসতে বসতে খেয়াল করলাম বাসের কন্ডাক্টার লোকটি ঘৃণার ও হতাশার দৃষ্টি নিয়ে একবার তাদের দিকে তাকাচ্ছে, একবার আমার দিকে। যেন বলতে চাইছে, "দেখসেন মামা, বাসের মধ্যে এগুলান কি শুরু করসে?"
প্রচন্ড জোরে ধমক দিয়ে উঠলাম, "এই ছেলে! সোজা হয়ে বসো। ওর পিছন থেকে হাত সরাও এখনই। পাবলিক বাসে এসব কি শুরু করসো অসভ্য কোথাকার!" সাথে সাথে কাজ হলো, ছেলেটি হাত সরিয়ে সোজা হয়ে বসলো। আর মেয়েটি ভালো সাজার জন্য আশপাশের সবাইকে শুনিয়ে ক্ষীণ সরে দুই একবার ছেলেটিকে বলল, "তোমাকে না আগেই মানা করসিলাম। ম্যা ম্যা।" আসলে ঢঙ, পুরাই শয়তান একটা। পরবর্তি স্টপেজ আসার সাথে সাথে দুজন বাস থেকে পালিয়ে বাঁচল।
বছর খানেক আগের কথা, গ্রামে বেড়াতে গিয়ে গ্রামের কিছু ভাই ও সমবয়সীদের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। গুটি কয়েক দোকান নিয়ে করা গ্রামের বাজারে বসে চা খাচ্ছি। পাশের আরেকটি দোকানের সামনে মুরুব্বী গোছের কিছু লোক চা খাচ্ছে ও গল্প করছে। এমন সময় খেয়াল করলাম একটি ছেলে সাইকেল নিয়ে বাজার অতিক্রম করার সময় মুরুব্বিদের দোকানের সামনে আসতেই সাইকেল থেকে নেমে হেঁটে হেঁটে দোকান পার হল,তারপর আবার সাইকেলে ঊঠে সেটি চালিয়ে চলে গেলো। আমি সেদিন ভীষণ অবাক হয়েছিলাম। পরে জানতে পেরেছিলাম যে এটিই নিয়ম। গ্রামের প্রতিটি ছেলেই মুরুব্বীদের শ্রদ্ধা-সন্মান প্রদর্শন করে এমনটি করে থাকে। আরো অবাক হয়েছিলাম এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে মহিলাদের যাতায়াত দেখে। তারা এমনিতেই বোরখা পরতেন। তারপরও যাতায়াতের সময় পুরো রিকশা বাড়তি একটা চাদরে সামনে থেকে ঢেকে রাখতেন। ঢাকা তথা শহরে এতটা আদব-লেহাজ ও সভ্যতা না দেখলেও প্রকাশ্যে পুরোদস্তর নোংরামিও অতটা দেখিনি হাতেগোনা কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া, তাও একটি নির্দিষ্ট মহলের মধ্যে। এই অল্প কিছুদিনে কি এমন হলো যে দৃশ্যপট পুরোপুরি বদলে গেলো? শুধু শহরে না, গ্রামেও। গ্রাম থেকে আসা অনেকের সাথে এসব বিষয়ে কথা হলে তারাই সাক্ষ্য দেয় যে তাদের মতে গ্রামের অবস্থা এখন শহরের চেয়েও খারাপ। আল্লাহ্ ভালো জানেন।
উপরোল্লিখিত কিছুদিন আগের বাসের ঘটনা ও বেশ আগেকার গ্রামের ঘটনা দুটোই ভুলে গিয়েছিলাম। মনে পড়ার কারন সাম্প্রতিক একটি ঘটনা। বগুড়ার একজন ম্যাজিস্ট্রেট কয়েকদিন আগে একটি পার্কে যুবক যুবতীদের অবাধে প্রেম ও অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হওয়ার জন্য আটক ও জরিমানা করেন। যেখানে এই ম্যাজিস্ট্রেটকে জাতীয়ভাবে সাধুবাদ জানানো উচিৎ সেখানে দেখা যাচ্ছে এক শ্রেনির মানুষরূপী শয়তান এই ভদ্রলোককে দোষারোপ করছে, গালমন্দ করছে, এমনকি এই ব্যবস্থা নেয়ার অপরাধে উল্টো তার বিচার দাবী করছে! প্রেম করা কি অপরাধ? সরকার কি প্রেম করা নিষিদ্ধ করেছে? দেশ কি তালিবান আইএসদের দখলে চলে গেলো? আরো কত কি!
একটা জাতিকে নষ্ট করতে খুব বেশি কিছু লাগে না। একজন হুমায়ুন আহমেদ, একজন জেমস, একজন জাফর ইকবাল – এমন কিছু লোকই যথেষ্ট। ও হ্যাঁ, সাথে আরো কিছু লাগে। লাগে চেতনা আর ফালতু আবেগ।
শেষ করছি সালাউদ্দিন আইয়ুবি (রাহ:) এর একটি উক্তি দিয়ে, "একটা জাতিকে যদি তুমি যুদ্ধ ছাড়াই ধ্বংস করতে চাও, তবে তার যুবসমাজে জেনা-ব্যাভিচার আর উলঙ্গপনার বিস্তার ঘটাও।
-- লিখেছেন: Asif Ishtiak
প্রচন্ড জোরে ধমক দিয়ে উঠলাম, "এই ছেলে! সোজা হয়ে বসো। ওর পিছন থেকে হাত সরাও এখনই। পাবলিক বাসে এসব কি শুরু করসো অসভ্য কোথাকার!" সাথে সাথে কাজ হলো, ছেলেটি হাত সরিয়ে সোজা হয়ে বসলো। আর মেয়েটি ভালো সাজার জন্য আশপাশের সবাইকে শুনিয়ে ক্ষীণ সরে দুই একবার ছেলেটিকে বলল, "তোমাকে না আগেই মানা করসিলাম। ম্যা ম্যা।" আসলে ঢঙ, পুরাই শয়তান একটা। পরবর্তি স্টপেজ আসার সাথে সাথে দুজন বাস থেকে পালিয়ে বাঁচল।
বছর খানেক আগের কথা, গ্রামে বেড়াতে গিয়ে গ্রামের কিছু ভাই ও সমবয়সীদের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। গুটি কয়েক দোকান নিয়ে করা গ্রামের বাজারে বসে চা খাচ্ছি। পাশের আরেকটি দোকানের সামনে মুরুব্বী গোছের কিছু লোক চা খাচ্ছে ও গল্প করছে। এমন সময় খেয়াল করলাম একটি ছেলে সাইকেল নিয়ে বাজার অতিক্রম করার সময় মুরুব্বিদের দোকানের সামনে আসতেই সাইকেল থেকে নেমে হেঁটে হেঁটে দোকান পার হল,তারপর আবার সাইকেলে ঊঠে সেটি চালিয়ে চলে গেলো। আমি সেদিন ভীষণ অবাক হয়েছিলাম। পরে জানতে পেরেছিলাম যে এটিই নিয়ম। গ্রামের প্রতিটি ছেলেই মুরুব্বীদের শ্রদ্ধা-সন্মান প্রদর্শন করে এমনটি করে থাকে। আরো অবাক হয়েছিলাম এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে মহিলাদের যাতায়াত দেখে। তারা এমনিতেই বোরখা পরতেন। তারপরও যাতায়াতের সময় পুরো রিকশা বাড়তি একটা চাদরে সামনে থেকে ঢেকে রাখতেন। ঢাকা তথা শহরে এতটা আদব-লেহাজ ও সভ্যতা না দেখলেও প্রকাশ্যে পুরোদস্তর নোংরামিও অতটা দেখিনি হাতেগোনা কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া, তাও একটি নির্দিষ্ট মহলের মধ্যে। এই অল্প কিছুদিনে কি এমন হলো যে দৃশ্যপট পুরোপুরি বদলে গেলো? শুধু শহরে না, গ্রামেও। গ্রাম থেকে আসা অনেকের সাথে এসব বিষয়ে কথা হলে তারাই সাক্ষ্য দেয় যে তাদের মতে গ্রামের অবস্থা এখন শহরের চেয়েও খারাপ। আল্লাহ্ ভালো জানেন।
উপরোল্লিখিত কিছুদিন আগের বাসের ঘটনা ও বেশ আগেকার গ্রামের ঘটনা দুটোই ভুলে গিয়েছিলাম। মনে পড়ার কারন সাম্প্রতিক একটি ঘটনা। বগুড়ার একজন ম্যাজিস্ট্রেট কয়েকদিন আগে একটি পার্কে যুবক যুবতীদের অবাধে প্রেম ও অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হওয়ার জন্য আটক ও জরিমানা করেন। যেখানে এই ম্যাজিস্ট্রেটকে জাতীয়ভাবে সাধুবাদ জানানো উচিৎ সেখানে দেখা যাচ্ছে এক শ্রেনির মানুষরূপী শয়তান এই ভদ্রলোককে দোষারোপ করছে, গালমন্দ করছে, এমনকি এই ব্যবস্থা নেয়ার অপরাধে উল্টো তার বিচার দাবী করছে! প্রেম করা কি অপরাধ? সরকার কি প্রেম করা নিষিদ্ধ করেছে? দেশ কি তালিবান আইএসদের দখলে চলে গেলো? আরো কত কি!
একটা জাতিকে নষ্ট করতে খুব বেশি কিছু লাগে না। একজন হুমায়ুন আহমেদ, একজন জেমস, একজন জাফর ইকবাল – এমন কিছু লোকই যথেষ্ট। ও হ্যাঁ, সাথে আরো কিছু লাগে। লাগে চেতনা আর ফালতু আবেগ।
শেষ করছি সালাউদ্দিন আইয়ুবি (রাহ:) এর একটি উক্তি দিয়ে, "একটা জাতিকে যদি তুমি যুদ্ধ ছাড়াই ধ্বংস করতে চাও, তবে তার যুবসমাজে জেনা-ব্যাভিচার আর উলঙ্গপনার বিস্তার ঘটাও।
-- লিখেছেন: Asif Ishtiak
No comments:
Post a Comment