যতবার তার নামে অপমান হবে তারচেয়ে বেশি করে আমরা তার জন্য দুরূদ পড়বো

রাসূলুল্লাহর (সা:) অপমান দেখলে সাহাবীদের কেমন লাগতো চিন্তা করুন। কিন্তু তাদের একটা সুবিধা ছিলো, তারা আল্লাহ্‌র রাসূলকে একদম সামনেই পেতেন। এই অপমানগুলো তিনি হাসিমুখে সহ্য করতেন বললে ভুল হবে, হাসিমুখে সহ্য করার মধ্যেও কোথাও একটা পাত্তা দেয়ার ভাব আছে। আল্লাহ্‌র রাসূলের মিশন এত বড় এবং তিনি মানুষটা এত বড় যে এসব ছিলো খুবই তুচ্ছ এবং অপাঙ্কতেয়। অপমানের মুখে নির্বিকার থাকার চেয়ে বড় পালটা অপমান আর কিছু নেই। একদল ইহুদি একবার আল্লাহ্‌র রাসূলকে (সা:) দেখে মুখ কচলিয়ে বললো আসসা-মু 'আলাইকুম। দেখাতে চাচ্ছে যে আসসালামু 'আলাইকুম বলেছে, কিন্তু মাঝখানে লা ফেলে দিয়েছে। সালাম অর্থ শান্তি, সা-ম অর্থ বিষ বা মৃত্যু। এই দেখে 'আইশা (রা:) তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন। কিন্তু আল্লাহ্‌র রাসূল (সা:) নির্বিকার ভাবে বললেন: 'ওয়া'আলাইকুম। অর্থাৎ "তোমাদের ওপরও"। লক্ষ্য করুন তিনি আসসালাম বলেননি বা আসসা-ম ও বলেননি। ব্যাপারটা এরকম যে তোমরা আমাকে যা দিলে সেটা তোমাদের জন্যও। আল্লাহ্‌র নবী (সা:) বাম গালে চড় খেয়ে ডান গাল ফিরিয়েও দিলেন না আবার প্রবল আক্রোশে হামলেও পড়লেন না। তিনি দুটি এক্সট্রিমের মাঝখানে থাকলেন এবং বিজয়ী হয়ে বের হয়ে এলেন। ভাবুন যারা তাকে আসসা-ম বলেছিলো তাদের কেমন লেগেছিলো। যেচে ইট মেরে পাটকেল খেয়ে ফিরে আসতে হোলো। মুহুর্তের ক্ষোভে 'আইশা চেয়েছিলেন আরও কিছু কথা শুনিয়ে দিতে। কিন্তু নবীজী (সা:) তাকে নিরস্ত করলেন: "আমি তো বলেছিই 'ওয়া'আলাইকুম।"

সাহাবীরা একবার এসে বললেন যে "হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আপনি কি পৌত্তলিকদের বিরুদ্ধে দু'আ করবেন না?" নবীজী (সা:) বললেন: "আমাকে মোটেই অভিশাপকারী হিসেবে পাঠানো হয়নি, বরং আমাকে তো পাঠানো হয়েছে রাহ্‌মাহ্‌ হিসেবে।" রাহ্‌মাহ্‌ - যাকে আমরা রহমত বলি - ক্ষমা, দয়া, করুণা। আজ যখন কোনও স্বল্পবুদ্ধির মানুষ আল্লাহ্‌র নবীকে অপমান করে, আপনি আমি নবীজীকে (সা:) কল্পনা করতে পারি। আপনি কোনও রাগী চেহারা খুঁজে পাবেন না, একটি সহাস্য, দয়ার্দ্র অথচ নির্বিকার মুখ খুঁজে পাবেন। তিনি তো নাফসি নাফসি-র নবী না যে নিজের চিন্তায় মগ্ন থাকবেন। তিনি হলেন সেই নবী যিনি মৃত্যুমুখেও বলে গেছেন উম্মাতী, উম্মাতী! আমার উম্মাহ্‌! আমার উম্মাহ্‌! আল্লাহ্‌র কাছে যিনি হাবীব তাকে কেউ ডাকাত বললেই কী? তিনি হলেন আল্লাহ্‌র হাবীব। এভাবেই উম্মাহ্‌ তাকে চেনে।

এই বিশ্বের সকল উজির নাজির রাজা বাদশাহ বিচার দিবসে তার শরণাপন্ন হবে যখন আর সকল নবী রাসূলরা য়া নাফসি য়া নাফসি বলবে। তার কথায় আল্লাহ 'আয্‌যা ওয়াজাল্ল্‌ শুরু করবেন বিচার দিবস। আল-কাউসার তারই, তার জন্যই মাকাম মাহমূদ - জান্নাতের সবচেয়ে প্রশংসিত স্থান। যতবার তার নামে অপমান হবে তারচেয়ে বেশি করে আমরা তার জন্য দুরূদ পড়বো। সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

-- আসিফ সিবগাত

বৃটিশরা দু’শ বছরের শাসনকালে আমাদের মাঝে হীনমন্যতা প্রোথিত করে দিয়েছে

বৃটিশরা তাদের দু'শ বছরের শাসনকালে আমাদের মাঝে সালাম এবং তল্পিবহন সংক্রান্ত হীনমন্যতা প্রোথিত করে দিয়ে গিয়েছে। এজন্য আমাদের পদস্থ কর্মকর্তারা লোকজন দেখলে মুখে কুলুপ এঁটে সালামের আশায় ভিক্ষার ঝুলি বিছিয়ে বসে থাকেন, সুস্থ সমর্থ দেহ নিয়েও অপরকে দিয়ে নিজের ব্যাগ বহন করিয়ে একপ্রকার আত্মপ্রসাদ লাভ করে থাকেন। অথচ এগুলো সবই অজ্ঞতাপ্রসূত অহমিকা। সালামের প্রকৃত উদ্দেশ্যের সাথে এর কোন মিল নেই! দুঃখের ব্যাপার হোল বৃটিশরা যদিও গত অর্ধশতাব্দিতে শেষপর্যন্ত সভ্যতার নাগাল পেয়েছে, পরস্পরকে নাম ধরে ডাকতে শিখেছে, নিজের কাজ নিজে করতে শিখেছে, নিজের বোঝা নিজে বহন করতে শিখেছে, আমরা এখনো কুনোব্যাঙের মত গর্তের ভেতর বসে আত্মতুষ্টি নিয়ে সেই পুরোনো সুরে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ঘ্যাং করতেই আছি। তবে আমাদের এই অজ্ঞতা বিশ্বের সামনে তুলে ধরা কি খুব জরুরী? শিক্ষিত লোকজনের এই অবস্থা হলে জাতি হিসেবে আমাদের ভবিষ্যত কোনদিকে ধাবমান? এবার মনে হয় আমাদের ভেবে দেখা দরকার।

-- রেহনুমা বিনত আনিস

হিন্দুদের দুর্গা পূজায় মুসলিমদের অংশগ্রহণ

হিন্দুদের দুর্গা পূজায় মুসলিমদের অংশগ্রহণ

যারা ইচ্ছাকৃত ভাবে বুঝেও না বুঝার ভান ধরে বিজাতীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে শরীয়তের নির্দেশকে অমান্য করে তাঁরা দ্বীনের প্রত্যেকটা মেজর হুকুম-আহকামের ক্ষেত্রেও এইভাবে ভাবে। যেমন- দাড়ির না রাখা, হিজাবের না পরা, টাখনুর উপর প্যান্ট পরা নিয়ে বলে-- এসবে আমরা খারাপ কিছু দেখিনা, সুদ-ঘুষের মত ব্যাপার গুলোকে এরা নিজেদের মত করে জায়েজ করে নেয়। একই মানুষ গুলোই থার্টি ফার্স্ট নাইট-জন্মদিন পালনসহ বিভিন্ন বিজাতীয় উৎসব পালন করে থাকে বা তাঁদের উৎসবে অংশগ্রহণ করে। এরা দ্বীনের হুকুম গুলোকে ইচ্ছাকৃত ভাবে এভাবে একগুঁয়েমি করে পাশ কেটে যায়।

#দুর্গা পূজা মুসলিমদের কোন ধর্মীয় উৎসব না হওয়া সত্ত্বেও অনেক মুসলিম সেখানে যাওয়ার প্রধান কয়েকটা কারণের উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে:
- সেখানে গান-বাজনা-নাচের আয়োজন করা হয়।
- বেপর্দা নারী ও লুল পরুষদের মাঝে অবাধ মেলামেশা উপভোগ করা যায় ।

প্রশ্ন আসতে পারে, হিন্দুরা তাদের দুর্গা উৎসবে শিরক করে কিন্তু আমরা করিনা। আমরা তো শুধু সেখানে যাই কিন্তু তাঁদের মূর্তিকে পূজা করিনা; কারণ, আমরা আল্লাহকে বিশ্বাস করি। অথচ, দুর্গা পূজায় গান-বাজনা-নাচ-মূর্তি পূজা হয়, শিরকপূর্ণ কথা পাঠ করা হয়--এটা জানার পরেও অনেক মুসলিম সেই শিরক পূর্ণ উৎসবে "মজা" নেওয়ার জন্য যায়।

এরা তাঁরাই, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ পবিত্র কুরানে বলেছেন,
"অনেক মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে।" [সূরা ইউসুফ-১০৬]

একইভাবে রাসূল(সাঃ) এই জাতীয় মুসলিমদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন,
"যে অন্য জাতির সাথে আচার-আচরণে, কৃষ্টি-কালচারে সামঞ্জস্য গ্রহণ করবে সে তাদের দলভূক্ত বিবেচিত হবে।"[সুনানে আবু দাউদ]

একটু ভাবলেই বুঝা যায়, দুর্গা পূজা বা বিজাতীয় যেকোন উৎসবে যাওয়া একজন মুসলিমের জন্য কতোটা ভয়াবহ ব্যাপার! দুর্গা পূজায় যাওয়া শিরক করার মত অপরাধ যা অনেকেরই নিজের অজান্তে ঘটে যাচ্ছে। আমাদের মনে রাখা উচিত, আল্লাহ বান্দার সবকিছু তাঁর (সুবহানাহু ওয়া তা'আলা) ইচ্ছা মাফিক ক্ষমা করবেন (গুনাহ'র পরিমাণ পাহাড়সম হলেও), কিন্তু বান্দার শিরক গুনাহ কখনো ক্ষমা করবেন না। শিরক গুনাহ কারী বিনা হিসাবেই জাহান্নামের যাবে এবং সে অনন্ত কাল সেখানে তাঁদের মত থাকবে। আল্লাহ আমাদের বুঝার তৌফিক দান করুন এবং শিরক থেকে হেফাজত করুন। আমীন।

--brother Mir Sajjad

মূর্তিপূজা একটি জঘন্য আচার যা শুধুমাত্র মনুষ্যত্বের সম্মানহানিই করে

​​যে মূর্তিপূজা করার ব্যাপারে স্বয়ং হিন্দু ধর্মের পন্ডিতগণ আর টেক্সটবুকসমূহ মতানৈক্যে ভরপুর, সেই অসার মূর্তিপূজার জন্য মুসলিমরা জানাবে শুভেচ্ছা? ভাই আমার, তুমি কি মনে কর তোমার হিন্দু ক্লাসমেট তোমার কুরবানী দেয়া গরুর জবাই দেয়া দেখতে আসবে আর তোমাকে শুভেচ্ছা জানাবে? তাহলে তুমি কেন তার পুজায় গিয়ে নাচো, শুভেচ্ছা জানাও? তোমার হিন্দু বন্ধুটি ঠিকই ধর্মীয় সহিষ্ণুতা আর ক্রীড বেচে দেয়ার বর্ডার লাইনটি চেনে। তুমি চেন না। কেউ তার ধর্ম পালন করবে, করুক। ইসলাম অন্য ধর্মের অনুসারীদের নিজ ধর্ম পালনে বাধ সাধতে বলে নি। সেটাই ধর্মীয় সহিষ্ণুতা। কিন্তু তুমি সহিষ্ণুতা বলতে যা বোঝ তা হবার নয়। কাউকে তার ধর্মীয় আচার পালন করতে দেয়া আর তার সাথে তার মিথ্যে ইলাহর ইবাদতে অংশ নেয়া এক নয়। সে তার মিথ্যে ইলাহর উপাসন করছে, আর তুমি তাকে সে জন্য শুভেচ্ছা জানাচ্ছ, এটা কি তার কর্মের প্রতি অ্যাফার্মেশন নয়? তুমি তো কোন হত্যাকারীকে হত্যার জন্য শুভেচ্ছা জানাও না! তাহলে হত্যার চাইতে জঘন্য অপরাধ--শিরকে লিপ্ত কিছু মানুষকে কেন শুভেচ্ছা জানাও? ধর্মীয় সহিষ্ণুতাকে তোমার মত করে ব্যাখ্যা করতে চাইলে তো হবে না ভাই। অমুসলিমদের প্রতি আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে। সেটা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল আলাইহিস সালাম ঠিক করে দিয়ে গেছেন। সে অনুযায়ী আমরা তাদের প্রতি দায়িত্ব পালন করবো। কিন্তু নিজের মাথা খাটিয়ে অদ্ভুত কোন আচার আবিষ্কার করবো না। যতটা সহিষ্ণুতা আল্লাহ দেখাতে বলেছেন, ঠিক ততটাই দেখাবো। এর বেশি নয়। তুমি কি নামাযে ২টির বেশি সিজদা দাও? দাও না। কেননা এটাই আল্লাহর বেধে দেয়া বর্ডার। এটা ক্রস করা যায় না। তবে কেন এর বাইরেও যে আল্লাহ বর্ডার বেঁধেছেন, তা ক্রস করার দুঃসাহস দেখাও? ধর্মসহিষ্ণু হও, ধর্মনিরপেক্ষ না। ধর্মনিরপেক্ষ মানে কি লিঙ্গনিরপেক্ষ জাতীয় কিছু? লিঙ্গনিরপেক্ষর লিঙ্গ থাকে? মূর্তিপূজা একটি জঘন্য আচার যা শুধুমাত্র মনুষ্যত্বের সম্মানহানিই করে। এই কারণেই বহু অমুসলিম পন্ডিত মূর্তিপূজার বিরোধিতা করেছেন। যদিও এখন ধর্ম মানেই বাপ দাদার অন্ধ অনুসরণ, তাই কে শোনে কার কথা? এই জঘন্য মূর্তিপূজার বিরুদ্ধেই আমাদের নবী ইব্রাহীম (আ) একা দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন গোটা জাতির বিরুদ্ধে। সেই ইব্রাহীমের(আ) অনুসারী তুমি, অথচ তুমিই সেই মূর্তিপূজায় শুভেচ্ছা জানাও? আত্মপরিচয়হীনতা একটি জঘন্য অভিশাপ। এই অভিশাপ আর অসম্মান নিয়ে তুমি কীভাবে বাঁচো?

--brother Nazmus Sakib

দেশেবিদেশে মুখে দাড়ি থাকার ও জঙ্গী সন্দেহ হওয়ার সমস্যা

বাংলাদেশে থাকতে মুখে সামান্য দাড়ি থাকলে লোকজন বলত আরে আরে দাঁড়ি কাট। নাইলে মানুষ জঙ্গি বলবে, জামায়াত বলবে, শিবির বলবে। কথাটা একেবারে ভিত্তিহীন না। কিছু বাস্তবতা আছে। ২০১০ সালে তিনজন পাকিস্থানি ছেলেকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে আইইউটির একজন ছিল । পরের দিন প্রথম আলো পত্রিকার হেডলাইন- " আরও তিন লস্কর জঙ্গি গ্রেফতার"। এদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ প্রমাণ হয় নি এবং সে পাকিস্থানি ছেলেকে কিছুদিন পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। বলাই বাহুল্য এটা প্রথম আলো ছাপে নাই। সম্ভবত উল্টা হতাশ হইছে। এর কিছুদিন পর এক মুরব্বি একদিন আমাকে ডেকে বললেন, "তোমার একজন কলিগকে নাকি গ্রেফতার করা হয়েছে। তুমিও ত এত ঘন ঘন মসজিদে যাও !" শুনে বেশ কষ্ট পেয়েছিলাম। উনাকে কিছু বলতে ইচ্ছা করে নাই। এক প্রকার ঘৃণা চলে আসছিল উণার প্রতি। এরপরেও আমি উনাকে সব সময় সম্মান করতাম এবং দেখা হলে ভাল আচরণ করতাম। এছাড়া আমি ইসলামি ভাবাপন্ন হয়ে যাচ্ছি, আমার ভবিষ্যৎ খারাপ, ইসলামিক ইয়ুনিভারসিটিতে পড়ি, এখানে থাকলে স্কলারশিপ পাওয়া যায় না এরকম কথা শুনতে শুনতে আমার কানের ছিদ্র বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। মজার ব্যপার হল যারা নিজে কলেজে পাশ করেন নাই তারাও অনেকে আমাকে এগিয়ে এসে এই সদুপদেশ দিতে চেষ্টা করতেন। শুনতাম আর ভাব করতাম- "এখানে ভর্তি হয়ে আসলেই ত বিরাট অন্যায় হয়েছে। এখন আমার কি হবে ! আমাকে বাঁচান প্লীজ। আমি বাঁচতে চাই "।

গত বছরে আমি আমস্টারডাম থেকে বার্সিলোনা যাব। এক মুরব্বি (অবশ্যই মুসলিম) বললেন আমি যেন শেভ না করে কোনভাবেই প্লেন এ না উঠি। আমাকে হেরাস করবে, আটকে রাখবে (যদিও এই ঘটনা যে ঘটে না তা না)। দেশ থেকে আসার সময় আমার ব্যাগে একটা কোরআন আর একটা দোয়ার বই ছিল। এটা কেউ একজন আবিষ্কার করলেন এবং আমার ব্যাগে আরও আনুসঙ্গিক জিনিস পাওয়ার সম্বাবনায় আতঁকে উঠলেন। আইইউটিতে ভর্তি যে একটা ভুল ছিল এটা আবারো জনসমক্ষে প্রমাণিত হল। পুনঃপুনঃ জিজ্ঞাসার সুম্মখীন হয়ে আমি অনেকবার সবাইকে আশ্বস্ত করলাম যে এই একটা কোরআন এবং এই একটাই ছাড়া ব্যাগে আর কিছু নাই। অবেশেষে ব্যাগ হতে কোরআন এবং সে বই নামিয়ে রেখে অবশ্যম্ভাবি জেলের সাজার সম্ভাবনা থেকে মুক্ত হয়ে তবেই বিদেশের পথে যাত্রা করলাম। এগুলো সব বাস্তব উদারহণ।

আমাকে দাঁড়ির সাইজ, নামাজ বা এ রিলেটেড জিনিস নিয়ে গত দুই বছরে কোন নন-মুসলিম প্রশ্ন করে নাই। এমনকি পরিক্ষার মাঝখানে ব্রেক নিয়ে নামাজ পড়েছিলাম একবার (যদিও সেটা আমার জন্য স্পেশাল একজাম ছিল)। আরকবার এক প্রফেসরকে বলেছিলাম- অমুক দিন ঈদ। আমি অমুক দিন পরিক্ষায় আসব না। সে প্রফেসর আমার পরিক্ষার তারিখ পরিবর্তন করলেন। ইসলাম পালনে যে প্রশ্ন অন্য ধর্মের লোকেরা করে না সেটা মুসলমানরা করে। হে গুরু, জামাত/শিবির/সিআইএ/আলকায়েদারা কোথায় থাকে?

বৎস এরা থাকে মুসলিম দেশগুলোতে মুসলিম সরকার এবং মুসলমানদের মনে।

-- জাহিদ রাজন

মেয়েরা চাইছে 'স্মার্ট' পোশাক পড়তে

ছেলেরা চাইছে মেয়েরা বোরকা পড়ুক, কিন্তু নিজেদের দৃষ্টি সংযত রাখতে মনে থাকে না। মেয়েরা চাইছে "স্মার্ট" পোশাক পড়তে, সাথে চাইছে ছেলেরা যেন খারাপ দৃষ্টিতে না তাকায়। হিপোক্রেসিটা এখানেই। আমি নিজে ধর্ম মানিনা, কিন্তু আশা করছি আশেপাশের মানুষ ধর্ম মেনে চলুক!!

-- নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

শাহবাগে গলাফাটানো স্লোগানের দৃশ্য কল্পনা করলে মুখে হাসি ফোটে

ফেব্রুয়ারি ২০১৩। শাহবাগের উন্মাদনায় উত্তাল দেশ। 'ধইরা ধইরা জবাই কর' স্লোগানে কাঁপছে ঢাকা শহর। আমি নিতান্তই ভাবলেষহীন মানুষ। ভার্সিটির ক্লাস শুরু হয়নি, হাতে অফুরন্ত সময়। ইসলামকে একমাত্র জীবনব্যস্থা হিসেবে স্বীকার করেছি বেশিদিন হয়নি। অনলাইনে ইসলাম নিয়ে টুকটাক লেখালেখিও শুরু করেছি। শাহবাগ নিয়ে একটা ধন্দে পড়ে গেলাম। একটা সেক্ট যারা শাহবাগের পক্ষে তারা আন্দোলনটাকে এমনভাবে গ্লোরিফাই করছে যেন তা স্বর্গীয় কোন ব্যাপার। আরেকটা সেক্ট প্রধানত জামাত-শিবিরের, তারা ব্যাপারটাকে টোটাল নষ্টামি ছাড়া কিছু দেখছে না। অবসর যেহেতু, সত্য অবলোকনের জন্য আমি অকুস্থলে উপস্থিত হলাম। একবার নয়, কয়েকদিন গিয়েছি শাহবাগে। কী ঘটে সেখানে, স্বচক্ষে দেখতে। বন্ধুমহলের প্রায় সবাই তখন শাহবাগের ঘোর সাপোর্টার। তাদেরকে দেখলাম সর্বোচ্চ শক্তি আর আবেগ খাটিয়ে স্লোগান দিচ্ছে। আমার পর্যবেক্ষণের অবজেক্ট অবশ্য ছিল ভিন্ন।

গাঁজাখাওয়া লাল চোখের দুর্গন্ধযুক্ত কাপড়ের কিছু পুরুষ-মহিলার কীর্তন আর যাত্রাপালার সাথে রাস্তার পাশে লেলিন, মার্কস, বার্টান্ড রাসেলদের নাস্তিকতা দর্শনের বই বিক্রি দেখে আমি আন্দোলনের উদ্দেশ্যটা চোখের সামনে দেখতে পেলাম। পাবলিক সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে ইসলামের বিরোধিতা করা, তাদের নিজস্ব দর্শন মানুষের মগজে ঢুকিয়ে দেওয়া। জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবির সাথে সাথে 'ধর্মভিত্তিক রাজনীতি' নিষিদ্ধের দাবি তো এরই ফল। এতে গলা মেলাতে দেখলাম পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়া সহপাঠীদের। আমি আর থাকতে পারলাম না। সত্য উন্মোচনের লক্ষ্যে শাহবাগের এই ভেতরের বিষয়গুলো নিয়ে বলতে শুরু করলাম। বন্ধুমহলে তখন আমার পরিচিতি "শিবির জুবায়ের" হিসেবে। মুখে দাড়ি, প্যান্ট টাখনুর ওপরে, শাহবাগের বিরুদ্ধে বলে-শিবির ছাড়া আর কী হতে পারে? এছাড়া আগেপরে কিছু 'বিশেষণ' তো আছেই। পুরনো বন্ধুদের অনেকের সাথেই দূরত্ব সৃষ্টি হল। এ ছিল অবশ্যাম্ভাবী। দুটো বিপরীত আদর্শের মানুষ একসাথে চলতে পারেনা। শাহবাগ কেবল সেই পার্থক্যটা স্পষ্ট করল। শাহবাগ ছিল সত্যিকার অর্থেই এক ফিল্টার। সেসময় অনেক মানুষের কাছে অনেক উপাধি পেয়েছি। আমাকে শিবির ট্যাগিয়ে শিবিরদের জবাই করার দৃঢ়তা আরোপ করা বন্ধু দেখেছি। অনেক কাছের মানুষ দূরে সরে গেছে। অনেকের অনেকরকম কথা শুনেছি, আচরণ দেখেছি। আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে ধৈর্যধারণ করেছিলাম। তার ফল আজকে পাচ্ছি।

আজ, এই সেপ্টেম্বর ২০১৪ তে এসে ঐ মানুষগুলোর শাহবাগে দৃঢ়চিত্তে গলাফাটানো স্লোগানের দৃশ্য কল্পনা করলে মুখে একটু হাসি ফোটে। সে হাসির ত্রিশভাগ বিদ্রুপ, ত্রিশভাগ আশাবাদ আর চল্লিশভাগ করুণা। সেদিন যারা আমার মত শাহবাগবিরোধীদের ধুয়ে দিয়েছিল তারা আজ 'শাহবাগ' শব্দটা উচ্চারণ করতেও লজ্জা পায়। যুগে যুগে সত্যের কাছে মিথ্যা সর্বদাই পরাজিত হয়েছে, হয়েই যাবে। আল্লাহ্‌ আমাকে সেই কঠিন দিনগুলোতে সত্যমিথ্যার পার্থক্য করার সামর্থ্য দিয়েছিলেন, এর কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই। তবু যারা সত্যকে মেনে নেয়নি, তারা আজ যেমন অপমানিত হচ্ছে, তেমনি হয়ে যাবে চিরদিন। ইসলাম ব্যতীত অন্যকিছুর মধ্যে যে সমাধান খুঁজেছে, মুক্তি খুঁজেছে, সে তা কোনদিন পায়নি, পাবেও না। পেয়ে গেছে কেবল লাঞ্ছনা। ইতিহাস সাক্ষী।

"বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা দূরীভূত হয়েছে, মিথ্যা তো দূরীভূত হবার জন্যই।" [বনী ইসরাঈলঃ ৮১]

-- জুবায়ের হোসেন

‘প্রিয়তমা, পোড়া রুটিই আমার পছন্দ

​​( ড. এ পি জে আব্দুল কালামের জীবন থেকে নেয়া)

"যখন আমি ছোট ছিলাম, আমার মা আমাদের জন্য রান্না করতেন। তিনি সারাদিন প্রচুর পরিশ্রম করার পর রাতের খাবার তৈরি করতেন। এক রাতে তিনি বাবাকে এক প্লেট সবজি আর একেবারে পুড়ে যাওয়া রুটি খেতে দিলেন। আমি অপেক্ষা করছিলাম বাবার প্রতিক্রিয়া কেমন হয় সেটা দেখার জন্য। কিন্তু বাবা চুপচাপ রুটিটা খেয়ে নিলেন এবং আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন স্কুলে আমার আজকের দিনটা কেমন গেছে।

আমার মনে নেই বাবাকে সেদিন আমি কি উত্তর দিয়েছিলাম কিন্তু এটা মনে আছে যে, মা পোড়া রুটি খেতে দেয়ার জন্য বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। এর উত্তরে বাবা মা'কে যা বলেছিলেন সেটা আমি কোনদিন ভুলব না। বাবা বললেন, 'প্রিয়তমা, পোড়া রুটিই আমার পছন্দ'। পরবর্তীতে সেদিন রাতে আমি যখন বাবাকে শুভরাত্রি বলে চুমু খেতে গিয়েছিলাম তখন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে তিনি কি আসলেই পোড়া রুটিটা পছন্দ করেছিলেন কিনা। বাবা আমাকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে বললেন, 'তোমার মা আজ সারাদিন অনেক পরিশ্রম করেছেন এবং তিনি অনেক ক্লান্ত ছিলেন। তাছাড়া একটা পোড়া রুটি খেয়ে মানুষ কষ্ট পায় না বরং মানুষ কষ্ট পায় কর্কশ ও নিষ্ঠুর কথায়। জেনে রেখো, জীবন হচ্ছে ত্রুটিপূর্ণ জিনিস এবং ত্রুটিপূর্ণ মানুষের সমষ্টি।

আমি কোনক্ষেত্রেই সেরা না বরং খুব কম ক্ষেত্রেই ভাল বলা যায়। আর সবার মতোই আমিও জন্মদিন এবং বিভিন্ন বার্ষিকীর তারিখ ভুলে যাই। এ জীবনে আমি যা শিখেছি সেটা হচ্ছে, আমাদের একে অপরের ভুলগুলোকে মেনে নিতে হবে এবং সম্পর্কগুলোকে উপভোগ করতে হবে। জীবন খুবই ছোট; প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে অনুতপ্ত বোধ করার কোন মানেই হয় না। যে মানুষগুলো তোমাকে যথার্থ মূল্যায়ন করে তাদের ভালোবাসো আর যারা তোমাকে মূল্যায়ন করে না তাদের প্রতিও সহানুভূতিশীল হও।"

[হিল্লোল হায়াতুল হকের অনুবাদ]

কারো আত্মসম্মানবোধে আঘাত করে পৃথিবীতে কোন আদর্শ কায়েম হয়না

আমি তখন মাত্র বৈদেশ এসেছি। সামার চলে। জামাইর সাথে কোন এক উইকেন্ডে দাঁত বের করে ঘুরে বেড়াচ্ছি। ও কি কাজে জানি দূরে গেল। আমি দাঁড়িয়ে গ্রীষ্মের ভয়ঙ্কর সৌন্দর্য দিয়ে মাখো মাখো প্রকৃতি মনযোগ দিয়ে দেখছি। এরকম সময়ে আমি বেশ ভাবালু থাকি। হঠাৎ পায়ের কাছে জনৈকা জার্মান রমনী থুথু দিয়ে কি কি সব বলতে বলতে চলে গেল। (অনুবাদ গরমের ভেতর কাপড়ের গাটটি সেজেছে! শখ দেখলে মরে যাই, উদ্ভট আরব কাহেঁকা ,থুঃ ! ) আমার নিজের জন্য প্রচণ্ড মায়া লাগল -- " দাঁত বের করে খুব দাঁড়িয়ে ছিলে হে ! লোকজন ছ্যাপ দিয়ে চলে যায়!"

তবে খুব অবাক হইনি। মারওয়া শেরবিনিকে তো এই দেশেই মেরে ফেলা হয়েছিল। আর নিজের দেশেও নানারকমের পরিস্থিতি মাড়িয়ে এসেছি। অবাক হব কেন? আমি তাকে কিছুই বললাম না। জার্মান ভাষায় তর্ক করার মত দক্ষ নই এক, আর দুই হল যারা ছ্যাপ দিয়ে মানুষকে নিজস্ব সিদ্ধান্ত বা মতামত জানাতে পছন্দ করে তাদের সাথে মাতৃভাষাতেও তর্ক করতে আগ্রহী নই। অনেক পরে আমার ল্যাংগুয়েজ ইন্সট্রাক্টরের সাথে এইসব সুখ দুঃখের কথা কিছু শেয়ার করেছিলাম। ভদ্রমহিলা ক্যাথলিক। টিপিকাল জার্মান। হাসতে হাসতে বলল,"তুমি তো ছ্যাপ খেয়েছ, আমি তো অলমোস্ট ঘুষি মারা খেয়েছি। হাঙ্গেরী গিয়েছি শীতকালে। মাথায় ভালভাবে স্কার্ফ লাগিয়েছিলাম। ওভার কোটটাও বেশ লম্বা ছিল। সহসা এক বিপ্লবী বুড়ি অ্যায়সা ঘুষি বাগিয়ে মাতাল কণ্ঠে চিৎকার করতে লাগল যে, আমি মুসলিম, আমি টেরোরিস্ট...আমি আজকে মরছি। সুতরাং এগুলি পাত্তা দিওনা। মাতাল বা উগ্রপন্থীরাই এরকম আচরণ করে।" আগে পড়েছিলাম, কাল আবার কোন পত্রিকায় তসলিমা নাসরিনের  "বাঙালীর বোরখা" পড়লাম। বুঝলাম উনি ক্ষ্যাপা। খারাপ মেয়ে , গালিবাজ মেয়ে, পড়ালেখা পারেনা মেয়েদেরই মৌলবি বাপ মায়ের চক্করে পড়ে বোরকা পরা উচিৎ ,এইটাই উনি বোঝাতে চান। অসুবিধা নাই। বুঝতে পেরেছি। সজীব ওয়াজেদ জয়ের উৎকণ্ঠার প্রতিফলন পত্রিকা অফিসে পড়বেই।

তাই আজকাল ঘুরে ফিরে এরকম লেখা আসছে। মানে ছ্যাপ দিয়ে আদর্শ প্রচার টাইপের লেখাঝোঁকা। কাউকে নীচু করে, কারো আত্মসম্মানবোধে আঘাত করে আমার মনে হয়না পৃথিবীতে কোন আদর্শ কায়েম হয়। জোর করে কাউকে বোকো হারাম বা আইসিস স্টাইলে বোরকা পরিয়ে যেমন আল্লাহর প্রতি ব্যক্তির ভালবাসা বাড়ানো অসম্ভব তেমনি এভাবে এত অসম্মান দেখিয়ে কাউকে নিজের আদর্শের প্রতি অনুরাগী করে তোলাও খুবই সীমাবদ্ধ চিন্তা। যে যেই আদর্শেই দাঁড়িয়ে থাকুন না কেন, কনভে করতে হলে করুন, জাস্ট কনভে। থুথুর সাহায্যে বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে বা বাঁধাছাঁদা করে কনভার্ট না। খুবই স্বল্প জ্ঞানের কাজ সেটা। কনভারশনের চিন্তাটা বরং ব্যক্তির নিজের ওপরে ছেড়ে দেয়াই ভাল।

-- জুম্মি নাহদিয়া

এভাবে বিক্রি হয় মেয়েটা আর তার সবকিছু

বিক্রি হয়ে যায়। পুরোপুরি বিক্রি হয়ে যায় মেয়েটার শরীর। চওড়া দামে বিক্রি হয় তার চুল,নখ,চোখ,চোখের চাহনী,গায়ের সাদা মাংস, ঠোঁট; শরীরের প্রতিটা ইঞ্চি ইঞ্চি রোমকূপ। সমাজের উঁচু চেয়ার দখল করে বসে থাকা কর্পোরেট গুরুদের চাই তার সবকিছু। তার উপরে,নিচে,ডানে,বাঁয়ে সবদিক থেকে রেডি থাকে সতর্ক ক্যামেরা। চারপাশে চোখ ধাঁধাঁনো উজ্জল আলোর ঝলকানি। যতটা কাছ থেকে পারা যায় তুলতে হবে সাব্জেক্টের ছবি। সাব্জেক্টের কোন কিছুই বাদ দেওয়া যাবে না। যেভাবেই হোক ফুটিয়ে তুলতে হবে সাব্জেক্টের শরীরের প্রতিটা ইঞ্চি লোমকুপের সৌন্দর্য্য,কোমলতা। সে ছবিতে ব্যবসা হবে। বিক্রি হবে কোটি টাকায়।

হাটে ওঠা গরুর মত খদ্দেররা তাকে যাচাই করে। সামনে,পেছনে,ডানে,বায়ে সবদিকে থেকে হেঁটে দেখায় খদ্দেরদের। নেচে,গেয়ে যতভাবে সম্ভব সে নিজেকে মেলে ধরে। মোবাইলের এসএমএসে হাকা হয় তার দাম। যার ঝুলিতে যত বেশি এসএমএস তার দাম তত বেশি এই হাঁটে। বাধ্য মেয়েটা তখন নেমে যায় কুৎসিত প্রতিযোগিতায়। জয়ী হওয়ার বাসনায় সে অস্থির। তার সবকিছু সে আরো উজাড় করে দিতে চায়। জিততে যে তাকে হবেই। তার ঘরের কোণের বোকা বাক্সটা তাকে ছোটবেলা থেকেই শিখিয়েছে- সৌন্দর্য্য ছাড়া সে সমাজে মুল্যহীন। সে কখনো প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না,চাকরি পাবে না,এমনকি বিয়েও হবে না। তবে সবই সম্ভব হবে তার কেবল রূপের ঝলকানি দেখাতে পারলেই। দিনের পর দিন দালালগুলো যাদের ভদ্র সমাজে আদর করে কর্পোরেট ডাকা হয় তারা অতি সুচারুভাবে মেয়েটার মাথায় প্রোগ্রামিং করে দিয়েছে এই ভাবনাগুলো। তাকে শিখিয়ে-পড়িয়ে ট্রেইনড করে তুলেছে কি করে নিজেকে বিক্রি করতে হয়। কি করে গালে,ঠোঁটে রঙ মেখে ভাঁড় সাজতে হয়।

সে হয়তো জানতে পারে না তাকে কর্পোরেট গুরুদের ভাষায় সে কেবল একটি 'প্রোডাক্ট। খোলা বাজারে তার শরীরের মাংস বিক্রি করে তারা তাদের ঘরের চাল কেনে। সে হয়তো বুঝতে পারে না, তার শরীরের প্রতিটা ইঞ্চি ইঞ্চি অংশ চোখ দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চেটেপুটে খায়। যার যেভাবে খুশি সেভাবে খায়। তাকে একজন মানুষ হিসেবে আর কখনো সম্মান করা হয় না। তাকে দেখা হয় কেবলমাত্র একটি ভোগের,বিনোদনের বস্তু হিসেবে।

আদর করে তাকে হয়তো সুপারস্টার খেতাবটা দেওয়া হয়। সাথে থাকে অনেক টাকা,খ্যাতি আর হাততালি। কিন্তু,দিনশেষে কেউ প্রোডাক্ট কেউ 'মাল' আবার কেউ 'কঠঠিন জিনিস' বলেই তাকে সম্বোধন করে।
মাঝে মাঝে হয়তো তার খুব কষ্টও হয়,ঘেন্না হয়। নিজের অনুভূতিগুলো প্রকাশ করতে ইচ্ছে হয় খুব। কিন্তু ততদিনে খুব দেরি হয়ে যায়। সে এখন কেবল একটি অনুভূতিই প্রকাশ করতে পারে। সেটা হচ্ছে ''ট্রেইনড হাসি''। তাকে ট্রেনিং দিয়ে শেখানো হয়েছে মুখটা কত ডিগ্রি এঙ্গেল করে,ঠোঁটটা ঠিক কতটুকু কাত করে হাসলে খুব হাততালি পড়ে। মানুষ খুব খুশি হয়। তার সেই মাপা হাসির নিচে চাপা পড়ে থাকে তার সকল অনুভূতিগুলো,ইচ্ছেগুলো। আজ আর তার নিজের বলে কিছু নেই,কেউ নেই। তার কোন স্বকীয়তা নেই। সে এখন একজন পুরোদস্তুর সার্কাসের এনিমেল। মানুষ আসে,দেখে,হাততালি দেয়,মজা লুটে। সে বিক্রি হয়ে যায় বারবার..প্রতিবার..বিক্রি..স্রেফ বিক্রি.

[collected from facebook]

হাসানের বিয়ে...

​​
হাসানের খালা ঈদের পর তাদের বাড়ি বেড়াতে এসে সকিনাকে বললেন , 'সকিনা, এবার হাসানের বিয়ের ব্যবস্থা কর।'

'আপা, আমিও কদিন ধরে এ কথাই ভাবছিলাম । ভাল পরিবারের একটি মেয়ের খবর-ও পেয়েছি । আপনি গিয়ে একদিন দেখে আসুন । '

'একদিন কেন? বলতো আজই যাই' , বলল খালা।

'এত তাড়াহুরার কি আছে! আমি বরং হাসানের মতটা জেনে নি আগে' ।

'হাসানের মত ? ওটা আমি-ই নিচ্ছি' ।.... 'হাসান'! খালা উচ্চস্বরে ডাকলেন, 'কোথায় গেলো পাজিটা' ?

'ও ওর আব্বা ভাইদের সাথে কাজী আবু জাফরের কাছে গেছে '।

খালা জ্বলে উঠ বললেন , 'আবার সেই বুড়োটা! উফ, বুড়োটা জ্বালিয়ে মারবে দেখছি'।

মায়মুনা হাসতে হাসতে বলল, 'কে খালাজান' ?
'কে আবার , কাজী আবু জাফর!'

কিছুক্ষণ পরই আব্দুল মুনিম পুত্রদের নিয়ে ফিরে এলেন । খালাজান হাসানকে ডেকে কোন ভূমিকা ছাড়াই জিজ্ঞেস করলেন, 'হাসান, এ মাসেই তোমার বিয়ে হবে । আমি সব ঠিকঠাক করছি , তুমি আবার অমত করে বসবে না তো ?'

হাসানকে চুপ থাকতে দেখে খালা বললেন, 'হুম বুঝেছি, কথায় বলে, নিরবতা সম্মতির লক্ষণ । ঠিক আছে তুমি যাও, আমি সব দেখছি । মায়মুনা! তুমি তৈরী হয়ে নাও । আমি এখন ই মেয়ে দেখতে যাবো । সকিনা, এবার বলো মেয়েটি কোন বাড়ির ?'

মায়মুনা ও তাহেরার চেহারায় খুশির ঝিলিক খেলছিলো !! তাই দেখে হাসান বলল,'খালাজান! আমার যে বিয়ে হয়ে গেছে !'

খালা চেঁচিয়ে বললেন, কি! কি বললে তুমি ?

খালাজান, আমি বলেছি, আমার বিয়ে হয়ে গেছে ।

কোথায় ? কখন ? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা... খালাজান হতভম্ব হয়ে গেলেন ।

'বিয়ে তো করেছি সেই কবে ! আপনাকে কেউ কিছু বলেনি ?'


খালাজান দু:খিত কণ্ঠে বললেন, 'কি ব্যাপার সকিনা , এসব কি শুনছি ?'

সকিনা, মায়মুনা ও তাহেরা বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে পরস্পরের মুখের দিকে তাকাচ্ছিলো । তাই দেখে খালা বললেন , 'হাসান, বিয়ে করেছো ভালো কথা, কিন্তু গোপন করলে কেন ? আর কাউকে না হোক অন্তত আমাকে বলতে পারতে । যাক, এখন বলতো মেয়েটি কে ? তার নাম কি ? বাড়ি কোথায় ?

হাসান বলল, খালাজান! ও এক অপরূপা সুন্দরী। স্পেনে এমন মেয়ে আর দ্বিতীয়টি নেই। আপনি চাইলে তাকে যখন তখন দেখাতে পারি । দাড়ান, আমি এখনি নিয়ে আসছি তাকে ।

হাসান তার কামরা থেকে তরবারি হাতে ফিরে এসে বলল, দেখুন খালাজান! এই আমার জীবনসঙ্গীনি !

খালাজান বললেন, বুঝেছি, আবু জাফরের সঙ্গদোষে পেয়েছে তোকে । আল্লাহ, বুড়োটার যন্ত্রনা আর সহ্য হয়না । ওতে তোমার কাছে নিয়ে যাও ।

হাসান হাসতে হাসতে চলে গেলো একদিকে । খালা কিছুক্ষণ চুপ থেকে ডাকলেন , হাসান এদিকে এসো ।

হাসান ফিরে এসে বললো, আরো কিছু বলবেন, খালাজান ?

বলবোনা মানে , তুমি তো আমার আসল প্রশ্নের ই জবাব দাওনি ।

হাসান গম্ভীর হয়ে বলল, আমি আপনার প্রতিটি প্রশ্নের ই জবাব দিয়েছি খালাজান । এখন এ নিয়ে আর কথা বলবেন না আশা করি ! '

*************************

'দরজা খুলে দাও, দরজা খুলে দাও!' বলতে বলতে হাসান পেছন থেকে ফটক রক্ষীদের ওপর ঝাপিয়ে পড়লো ।

গ্রানাডার মুজাহিদ ইলিয়াস, দুজন মরক্কো সেনা ও চারজন আলমেরিয়া ও ভিগার মুজাহিদ হাসানের ডানে বামে পৌছে গেলো । তারা সারিবদ্ধভাবে আক্রমণ চালিয়ে শত্রুদেরকে ফটক থেকে হটিয়ে দিচ্ছিলো । কিন্তু এ সময় আঙিনা থেকে নতুন একদল শত্রুসেনা তরঙ্গের মত তাদের দিকে এগিয়ে এল । শত্রুদের দুটি বর্শা এক সাথে হাসানের বুকে আঘাত করলো । কাধে এসে পড়লো তরবারির আঘাত ! সাথে সাথে মাটিতে পড়ে গেলো ও । ইলিয়াস ও হাসানের সাথে আহত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলো । খৃষ্টান সেনারা প্রবল বেগে অগ্রসর হয়ে পুনরায় ফটক আটকে দাড়াল ।

বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া দশজন মুজাহিদ আবার একত্রিত হয়ে ফটকের কাছে এলো । তারা আহমদ ও সঙ্গীদের নিয়ে দরজা খুলবার চেষ্টা করলো । কিন্তু খৃষ্টানরা প্রতিরোধের দেয়াল তুলে পাঁচজন মুজাহিদকে শহীদ করে দিলো । আহমদ ও তার সঙ্গীরা প্রতিরোধ অগ্রাহ্য করে আবার ফটক স্পর্শ করলো এবং ফটকের বড় লৌহদন্ডটি সরিয়ে ফেলতে সক্ষম হলো । আহমদ ও তার সঙ্গীরা নারায়ে তকবীর ধ্বনিতে কেল্লা কাপিয়ে ফটকের পাল্লায় ধাক্কা দিলো । খুলে গেলো ফটক ! রাবাতের মুজাহিদরা প্রচন্ড ধ্বনি তুলে প্রবল ঝড়ের বেগে কেল্লায় প্রবেশ করলো । এদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন স্বয়ং আমীর ইউসুফ বিন তাশফিন ।

*************************

আব্দুল মুনিম ও হাসানের লাশ নিজ হাতে কবরে নামালেন আমীর ইউসুফ । হাসানের মুঠিতে তখনো তরবারির বাট । এক সিপাই তরবারিটি হাত থেকে খুলতে গেলে আহমদ কেঁদে বললো , ' না না , আমার ভাইয়ের অলঙ্কার ছিনিয়ে নিওনা । তরবারির চাইতে প্রিয় কিছুই তার ছিলো না । সে বলতো, তরবারির সাথে আমার বিয়ে হয়ে গেছে ।'

হাসানকে তলোয়ার হাতে ধরা অবস্থাতেই দাফন করা হলো !

ইউসুফ বিন তাশফিন - (নসীম হিজাজী) : হিজরী পঞ্চম শতকে পতনোন্মুখ খন্ডবিখন্ড স্পেনের মুসলমানদের ওপর খৃষ্টান সম্রাট আলফানসুর আক্রমণের প্রতিরোধে আফ্রিকার মরক্কোর আমীর ইউসুফ বিন তাশফিনের জাল্লাকা ও হিসনুল্লায়েত কেল্লা বিজয়ের মাধমে স্পেনের মুসলমানদেরকে ফের বিজয়ী করার গল্প নিয়ে লেখা উপন্যাসের সবচেয়ে আবেগী গল্পাংশটুকু হলো হাসান!! সে গল্পের অন্য মূল দুই চরিত্র সা'দ ও আহমদের ছোট ভাই...

@ লেখক: স্বর্ণলতা, @ সোর্স লিঙ্ক

লাক্স-চ্যানেল আইয়ের শাড়ি-ব্লাউজ ক্যাচালে

​​
লাক্স-চ্যানেল আইয়ের শাড়ি-ব্লাউজ ক্যাচালে আমার IELTSএর স্পিকিং মডিউলের কথা মনে পড়ে গেল। আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, আধুনিক ফ্যাশন ট্রেন্ড সম্পর্কে বলো। আমি বললাম, দেখতেই পারছো আমি তেমন ফ্যাশন সচেতন না। আর আমি পড়ি "আন্তর্জাতিক সম্পর্ক" বিভাগে, তাই আমি একটু ভিন্নভাবে দেখি পুরো বিষয়টা। পোশাক মানুষের মৌলিক চাহিদা। অতীতে মানুষ নিজেরাই নিজেদের পোশাক তৈরি করে পড়তো তাই পোশাকটি কতটুকু টেকসই সেটাই বিবেচনা করতো যেন শীঘ্রই নতুন করে পোশাকের পেছনে আর খরচ করতে না হয়। ধীরে ধীরে জনসংখ্যা বাড়লো এবং পোশাক তৈরির ব্যাবসা আরম্ভ হল, শ্রমিক-কাচামাল-পরিবহন-শ রুম- এডভারটাইজিং-মডেল সব মিলিয়ে ব্যাপক কর্মসংস্থান এবং একটা বিরাট বাজার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে আমরা বাস করি মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগে আর মুক্তবাজার অর্থনীতির ব্যাবসার মূলমন্ত্র হল চাহিদা ও যোগান। পোশাকের চাহিদা অক্ষুণ্ণ রাখতে হলে নতুন কিছু যোগান দিতে হবে, আর পোশাক যেহেতু একটা স্থির পণ্য, তাই মিডিয়ার সাহায্যে নিত্যনতুন ফ্যাশন ট্রেন্ড তৈরির মাধ্যমে নিয়মিত আমাদের চাহিদার পরিবর্তন করা হয় যেন ব্যাবসাগুল নিয়মিত নতুন নতুন পণ্যর যোগান দিতে পারে। সুতরাং, ফ্যাশন ট্রেন্ড বিষয়টা আমার কাছে মূলত বিজনেস ট্রেন্ড।
..........................
আমি একটু আতংকেই ছিলাম কেমন স্কোর আসে তা নিয়ে, তবে আলহামদুলিল্লাহ্‌ বেশ ভালই স্কোর দিয়েছিল স্পিকিং মডিউলে।
...........................
 তাই আজ আমি ব্লাউজের ভেতর শাড়ি দেখে শকড হই না, অনন্তকাল ধরে বাঙ্গালী রমণীরা চাহিদায় স্থির থাকলে তো ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির রেভিন্যিউতে নতুন রেভ্যিনুউ যোগ হবে না, এজন্য চাই নতুনত্ব, যদি কোনমতে "ফেবু নিন্দুক"দের এড়িয়ে ব্লাউজের ভেতর শাড়ির ট্রেন্ডটা দাড় করানো যায়ই তাহলে এর সাথে সাথে ফ্যাশন একাডেমীগুলোতে এই বিশেষ ফ্যাশন বিশেষজ্ঞ কিছু ডিজাইনার দাড়াবে, কিছু বুটিক হাউস দাড়াবে এবং কিছু পেশাদার মডেলও দাড়িয়ে যাবে। সব মিলিয়ে কিন্তু বেশ বড়সড় একটা অর্থনৈতিক পরিসর।
..............................
সমুদ্রে পেতেছি শয্যা, শিশিরে কিসের ভয়? ক্যাপিটালিস্ট যুগে নিয়েছি জন্ম, লাক্স-চ্যানেল আইয়ে কিসের শক!!!

-- প্রজন্ম ছিয়াশি

কায়সার ও কিসরা - নসীম হিজাযী

​​
​​
আদী ও তার ছেলেরা ওমরকে খুঁজতে বেরিয়েছে এক প্রহর আগে । প্রদীপের ক্ষীণ আলোয় বসে আছে সামিরা । তার ডাগর আঁখিতে বেদনার ছাপ । সামিরা দুহাত উপরে তুলে দরদমাথা কণ্ঠে প্রার্থণা করছিলো : "ওগো মানাত! প্রথিবীর কোন কিছুই তো তোমার কাছে গোপন নেই । ভাইজান কোথায় আছে তা তুমিই জানো..."

..আসেম ভেবেছিলো ওমরকে পৌঁছে দিয়েই ফিরে যাবে সে । শান্তির দিনগুলো শেষ না হলেও আওসের কারো পক্ষে বনু খাজরাজের সীমায় পা রাখা নি:সন্দেহে অবাঞ্চিত ঘটনা...

....ইউসিবার প্রশ্নের জবাবে ইরজকে বিস্তারিত বলতে হলো, "মিসর থেকে সংবাদ পেয়েছি, আসেমের খোজ পাওয়া যাচ্ছেনা..." ইউসিবা চমকে তার দিকে তাকালো.. কিন্তু ইউসিবাকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই বেড়িয়ে গেলো ইরজ । ....

নীলনদের উপত্যকা বেয়ে দক্ষিণ দিকে চলছিলো ইরানী লশকর......

* * * * * * * * * *

..... কায়সার ও কিসরা হলো আজ হতে পনেরো শতক পূর্বে আরবে দ্বীন ইসলামের আবির্ভাবের সময়কার রোম ও পারস্যের প্রেক্ষাপটের এক অবিষ্মরনীয় ঐতিহাসিক উপন্যাস । কায়সার ও কিসরা যারা পড়েনি, তারা ওই সময়টার পৃথিবীকে চেনে কেবল মক্কা-মদীনা দিয়ে । মুহাম্মাদ সা: এর জন্ম থেকে শুরু করে নবুওয়্যাত - দাওয়াত - নির্যাতনের শিকার হওয়া - হিজরত - যুদ্ধবিজয় - বদর ওহুদ খন্দক - আলী- ওমর - আবুবকর - আব্বাস - হামজা -সালমান ফারসী .. মুসলিম ঘরে ঘরে এই তো গৎবাঁধা পরিচিত ঘটনাপণ্জী । কায়সার ও কিসরা যারা পড়বে তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন এঙ্গেল থেকে রুদ্ধশ্বাস আনন্দে জানতে পারবে সেই সময়টাকে ! কসম করে বলছি, এই বইটার প্রথম পাতা থেকে শুরু করে চারশত পনেরো পাতায় পৌছানোর আগে পর্যন্ত কোন পাঠক বই ছেড়ে উঠতে পারবেনা ।

ইয়াসরিব (মদীনা) এর বনু আওস গোত্রের এক যুবক আসেমকে নিয়ে শুরু হয় গল্পটা । এও এক নতুনত্ব । আজ পর্যন্ত সীরাতুন্নবী কিম্বা আরবের ইতিহাসের অন্য কোন গল্প এভাবে শুরু হতে দেখিনি । অস্ত্র কেনার জন্য ঋণ দিয়ে, কখনো রাতের আধারে একগোত্রের বাগানে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে, কখনো গুপ্ত হত্যা করে বনু আওস ও বনু খাজরাজের রক্তাক্ত শত্রুতায় ইন্ধন যুগিয়ে ইয়াসরিবের প্রভাবশালী বিচারক গোষ্ঠীতে পরিনত হয় চিড়দিনের ষড়যন্ত্রকারী ইয়াহুদীরা ।

আরবে কণ্যাশিশুর পিতা হবার অপমানের জ্বালা জুড়াতে জীবন্ত কবর দেয়ার কথা তো এতদিন কেবল বর্ণনা পড়ে এসেছি । কায়সার ও কিসরায় পেলাম তার মর্মস্পর্শী গল্পগাঁথা ।

যারা ভাবছেন, আমরা নবীর জীবনী জানি, আরবের ইতিহাস জানি, নতুন করে সেগুলো পড়তে বিরক্ত লাগবে, তাদের বলছি, এ উপন্যাসে আরবের অংশটা বড় সামান্য । খুব অল্প সময় এটা আরবে থাকে । চলে যায় রোমে - চলে যায় পারস্যে ! সিরিয়া - হেজাজের শহরগুলোতে সরাইখানায় বা যুদ্ধক্ষেত্রগুলোতে - সমুদ্রবন্দরগুলোতে - রাজপথ থেকে রাজপ্রসাদগুলোতে - বস্তিগুলোতে , পাহারে, উপত্যকার সংকীর্ণ রাস্তাগুলোতে- কখনো উষর মরুর উটের চামড়ায় গড়া তাবুগুলোতে। রোম আর পারস্যের যুদ্ধক্ষেত্রগুলোতে চিরদিন পিষ্ট হয় সাধারন অসহায় মানুষগুলি । রোম বা পারস্য কারো বিজয় বা পরাজয়ই তাদের ভাগ্যকে একচুল পরিবর্তন করতে পারেনা

গল্পের পরতে পরতে পাঠকের মনে শান দিয়ে যাবে আইয়্যামে জাহেলিয়ার বিভৎস অন্ধকার । মানবতার ডুকরে ডুকরে কান্নার ফোপানি । সারা দুনিয়া জুড়ে... অসংখ্য অসংখ্য নাটকীয় বাস্তব ঘটনাপঞ্জী! উপন্যাসটা পড়তে পড়তে চরমতম কট্টর মানুষও বুঝতে পারবে, পৃথিবীর ওই কঠিনতম সময়ে নবী মুহাম্মাদ সা: এর ইসলাম ই ছিলো মুক্তির একমাত্র উপায় ! অযুত নিযুত মানুষ জ্ঞাতসারে কিম্বা অজ্ঞাতসারে অপেক্ষা করছিলো মুক্তির সূর্য ইসলামের ।

চরম বিশৃংখল লন্ডভন্ড একটা পৃথিবী শুরু হয় বইয়ের শুরু থেকে । সেই বিশৃংখলা থেকে মুক্তি পেতে অথবা সেই বিশৃঙ্খলার স্রোতে গা ভাসিয়ে অসহায়ভাবে সাতরে চলতে চলতে গল্পের শেষটায় গিয়ে আবিষ্কার হয়, অলৌকিক এক বাস্তবতার । গল্পের নায়ক আসেম, যার উক্তি ছিলো, কখনো সম্ভব নয় এই ভূখন্ডে শান্তি আনবার, সে যখন জীবন নিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে আরব থেকে বহু বহু দূরে, তখন আরবে ঘটে চলে অসংখ্য অভূতপূর্ব ঘটনা যা পাঠেরা আগেই জানে বলে এ উপন্যাসে একেবারেই আসেনি । আসেনি বলেই বড় আফসোস হয় আসেমের জন্য ! সে অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হয়ে - রোম পারস্যের অসংখ্য ঝড়ঝাপ্টার অভিজ্ঞতা নিয়ে একসময়ে ফিরে আসে জন্মভূমিতে, এসে খুজে পায়না পুরোনো দিনের দেখে আসা আওস খাজরাজের কুটিল শত্রুতার লেশমাত্র!

সবাই বইটা পড়লে আমার বড় ভালো লাগবে । আমি যে আনন্দ পেয়েছি বইটা পড়ে, যে নতুনত্ব পেয়েছি, যে অদ্ভুত স্বাদ পেয়েছি, কেউ তা থেকে বঞ্চিত হোক, তা চাইনা ।

* * * * * * *

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

'আল্লাহর রাসুল মুহাম্মাদ সা: এর পক্ষ থেকে ইরান সম্রাট কিসরার নামে। তাকে সালাম, যে হেদায়াতের অনুসরণ করে । আল্লাহ এবং তার রাসুলের উপর ঈমান আনার পর ঘোষণা করে যে আল্লাহ এক, একক । তিনি আমাকে সমগ্র বিশ্বের নবী করে পাঠিয়েছেন ।প্রতিটি মানুষকে তিনি আল্লাহর ভয় দেখাতে পারেন । যদি তুমি ইসলাম গ্রহণ কর শান্তি পাবে। আর যদি ফিরে যাও তবে প্রজাদের সকল দায় দায়িত্ব তোমার'

দোভাষী সম্রাটকে চিঠির ভাষা বুঝাচ্ছিলো । দরবারীদের হাসি চেপে রাখা ছিলো বড় মুশকিলের ব্যাপার । .....

* * * * * * * *

পারভেজ গ্লাস দেয়ালে ছুড়ে মারলেন। দারোগা তখন তাকে তার সেনাপতি সীনের মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকরীর খবর দিচ্ছিলো ।

: সে মানুষের সামনে আমার অপমান করেছে । তার চামড়া তোলার পূর্বে টেনে জিহবা ছিড়ে ফেলার উচিত ছিলো
: তাকে বেশিক্ষণ চিতকার করার সুযোগ দেয়া হয়নি ।
: আমার ব্যাপারে সে কি বলেছিলো ?
: ও বলছিলো আরবের এক নবীর ভবিষ্যঁবানী সত্য হবার সময় হয়ে এসেছে ।
:তোমার কথা আমি বুঝিনি..
: আলীজাহ! আরবের সে নবীর ভবিষ্যতবানী হলো কিছুদিনের মধ্যে রোমানরা বিজয়ী হবে! ধুলায় মিশে যাবে ইরানীদের জুলুমের হাত ।

* * * * * *

নীরবে উভয়ে পথ চলতে লাগলো । হঠাৎ থেমে আসেম বললোম, সরাইখানার ব্যবসায় আমি তৃপ্ত । আমি শুধু বেচে থাকতে চই।
:না, বর্তমানকে নিয়ে তুমি তৃপ্ত থাকতে পারোনা । আমার বিশ্বাস হঠাৎ তোমার বিবেক তোমাকে সচেতন করে তুলবে ।
: কস্তুনতুনিয়ার লাখো মানুষ ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য আমি কিছু করতে পারি, আপনি আমায় কোনদিন বলেন নি ।
: শুধু অপেক্ষা করতে পারো আসেম, তাতারীদের রক্তের পিপাসা মিটাতে পারবেনা ওরা কেউ।


* * * * * * *

: ক্লেডিস ফ্রেমসের সাথে খানিক আলাপ করে আসেমের দিকে ফিরে বলল , আসেম, হেরাকলে আমরা খুব শিঘ্রী একটা মেলার আয়োজন করেছি । আমরা কস্তুনতুনিয়ার সব বন্ধুরা ওখনে চলে যাচ্ছি । কয়েকদিনের ভেতরে তুমিও চলে আসো ।

* * * * * * *

ওহ ! বলা হয়নি , গল্পের নায়িকার নাম ফুস্তিনা । টুকরো টুকরো কিছু কথোপকথোন তুলে দিয়ে আমি সবার আগ্রহ বাড়ানোর চেষ্টা করে গেলাম । জানিনা কতটা পেরেছি ।


* * * * * * *

আরবের নবীর ভবিষ্যৎবানী । যা তিনি করেছিলেন রোমানদের বিজয়ের ব্যাপারে অথচ ইরানীদের আক্রমনে বিশাল রোমান সাম্রাজ্য তখন শুধুমাত্র সবশেষ আশ্রয় কস্তুনতুনা গিয়ে সীমাবদ্ধ হয়ে পারভেজের করুনার ভিখারী হয়ে গিয়েছিলো । পেছন দিক থেকে তারা আক্রান্ত হত জংলী তাতারীদের । এসময়ে পারভেজ তার সেনাপতি সীন কে হত্যা করলো অন্যায়ভাবে । ঘুরে গেলো ইতিহাসের ভাগ্যের চাকা ...

আলিফ-লাম-মীম৷ রোমানরা নিকটবর্তী দেশে পরাজিত হয়েছে এবং নিজেদের এ পরাজয়ের পর কয়েক বছরের মধ্যে তারা বিজয় লাভ করবে৷ ক্ষমতা ও কতৃত্ব আগেও আল্লাহরই ছিল৷ পরেও তাঁরই থাকবে। আর সেদিনটি হবে এমন দিন যেদিন আল্লাহ প্রদত্ত বিজয়ে মুসলমানরা আনন্দে উৎফুল্ল হবে । আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী ও মেহেরবান৷ আল্লাহ এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, আল্লাহ কখনো নিজের প্রতিশ্রুতির বিরুদ্ধাচরণ করেন না৷ কিন্তু অধিকাংশ লোক জানে না৷ (সূরা আর-রূম : আয়াত ১-৬)

রোমানদের বিজয়ের সাথে সাথেই ৩১৩ জনের মুসলিম বাহিনীও বদরে বিজয়ী হয়ে অসম্ভব সে ভবিষ্যৎবানীকে সত্যে পরিনত করে চমকে দিলো বিশ্ববাসীকে । চমকে দিলো ইতিহাসকে । বইটা পড়লেই বুঝা যাবে, এ ভবিষ্যৎবানী কতটা উদ্ভট আর হাস্যকর মনে হবার কথা ছিলো...

লিখেছেন- স্বর্ণলতা @ সোর্স লিঙ্ক 

শাবরা ও শাতিলা গণহত্যা

১৯৮২ সালে, প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনকে (PLO) উতখাত করার উদ্দেশ্যে ইসরায়েল লেবাননে হামলা করে ও বৈরুত দখল করে নেয়। অ্যারিয়েল শ্যারন তখন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তার মদদে, ফ্যালাঞ্জিস্ট নামক খ্রিস্টান জঙ্গিবাহিনী ১৯৮২ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর শাবরা ও শাতিলা নামক দুটি ফিলিস্তিনী শরণার্থী শিবিরে এক নির্মম গণহত্যা চালায় যেখানে প্রায় ৫০০০ ফিলিস্তনী নারী-পুরুষ-বৃদ্ধ-শিশুসহ শখানেক লেবানিজ নিহত হয়। ইসরায়লী আর্মি এই সময় শিবিরগুলোকে ঘিরে রেখেছিল যেন কেউ বের না হতে পারে। এবং তারা হত্যাকারীদের সবধরনের রসদ সরবরাহ করছিল। ঘটনার আগেরদিন ১৫ই সেপ্টেম্বর ৬৩জন ফিলিস্তিনী বুদ্ধিজীবি, আইনজীবি, ডাক্তার, নার্স এবং শিক্ষককে চিহ্নিত করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।

রবার্ট ফ্রিস্কের বর্ণনা অনুযায়ী, যেসব সাংবাদিক এই গণহত্যার পর ঘুরে ঘুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিলেন, বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন সবাই, নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তারা। সংঘর্ষে ডজনখানেক মৃতদেহ মেনে নেয়া যায়, কিন্তু হাজার হাজার মানুষের অর্থহীন হত্যা? সারি সারি নারীর দেহ পড়েছিল যাদের শরীরের ছিন্নপোষাক আর দেহের ভঙ্গি শারীরিক অত্যাচারের ইঙ্গিত করছিল, আরো ছিল গলাকাটা শিশুর মরদেহ। সারি সারি করে দেয়ালের সামনে পড়ে থাকা তরুণদের লাশের পিঠে ছিল গুলির চিহ্ন। ইউএস আর্মির রেশন টিন, ইসরায়লী আর্মির যন্ত্রপাতি আর হুইস্কির খালি বোতলের পাশে জঞ্জালের মতো স্তুপ করে রাখা হয়েছিল ছোট ছোট বাচ্চাদের পচা গলা দেহ।

বিশ্ব মিডিয়া বরাবরের মতোই এটিকে ছোট্ট একটি ঘটনা হিসেবে পাশ কাটিয়ে গেছে। নীরব থেকেছে বিশ্ব। When does an atrocity become a massacre? রবার্ট ফ্রিস্ক প্রশ্ন করেছেন, how many killings make a massacre? একশ, তিনশ, হাজার? When is a massacre not a massacre? When the figures are too low? Or when the massacre is carried out by Israel's friends rather than Israel's enemies? বিশ্ব আবারও নিশ্চুপ!

আজকে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে মুসলিম কোন জঙ্গিবাহিনী এই যজ্ঞ চালালে যুগ যুগ ধরে আমাদের প্রতি পদে পদে এই কথা মনে করিয়ে দেয়া হতো, ইসরায়েলের ১০ জন নারী-শিশু মুসলমানদের হাতে মারা গেলে ১০০০০ মুসলমানের প্রাণ নিয়ে তার শোধ দিতে হতো। কিন্তু বিশ্বের ১ বিলিয়ন মুসলমানের কয়জন শাবরা-শাতিলার কথা জানি? ৫০০০ ফিলিস্তিনীর, খ্রিস্টান জঙ্গিবাহিনী কর্তৃক হত্যাযজ্ঞের দিনটিও তাই নিরবে চলে যায়। আমরা মুসলমানরা কে কার চেয়ে বড় মুসলমান সেই দ্বন্দ্বে ব্যস্ত আছি। ছোট্ট শিশুর মৃতদেহ কাদায় না, কিন্তু ভাইদের দাড়ির দৈর্ঘ্য নিয়ে আমি চিন্তিত থাকি, ধর্ষণ আমাকে বিব্রত করেনা, কিন্তু আপারা নিকাব না পড়লে তলোয়ার নিয়ে নেমে পড়তে ইচ্ছা করে। ৫০০০ ভাইবোনের হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার মুরোদ নাই, কিন্তু হামাস ইসলামের ইমেজ নষ্ট করে ফেলল কিনা সেই চিন্তায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। পাছে বিশ্ব আমাকে জঙ্গি মনে করে? আরে বোকার দল, বিশ্বতো তোমাদের মানুষই মনে করেনা, জঙ্গি মনে করবে কি?

কবে এই মরণ ঘুম ভাঙ্গবে আমাদের? কবে মানুষ হিসেবে নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে পারব? শাবরা-শাতিলার শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি, আর এক দুর্বল মুসলমান হিসেবে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাই প্রতিটি রক্তের হিসাব যেন ঐ হত্যাকারীদের কাছ থেকে নেয়া হয়।

-- চিন্তিত চিন্তাবিদ

স্টার প্লাস আর বাংলাদেশের নারীদের রেসের জীবন

প্রায় সাত বছর আগের কথা। এক বাচ্চাকে পড়াতাম। বাচ্চার মা মানুষ হিসেবে সহজসরল ভালোই ছিলেন কিন্তু লাইফস্টাইল ছিল অতিমাত্রায় টিভিসিরিয়ালকেন্দ্রিক। স্টার প্লাসের প্রতিটি সিরিয়াল দেখতেন। সেটা নিয়ে আবার অন্যদের সাথে আলোচনা করতেন এবং পরবর্তী পর্বে কি ঘটতে পারে তা অনুমান করার চেষ্টা করতেন। একেবারে বাজে মানের কাপড়ও খুব আগ্রহ নিয়ে পরতেন যদি সেটা কোন সিরিয়ালের নায়িকার পরনে দেখতেন। সংসারের সব কাজই করতেন। কিন্তু মনে হত তিনি ওই সংসারের না, স্টার প্লাসের পরিবারের সদস্য।

একদিন আমাকে তার এ্যাক্সিডেন্ট এর কাহিনী শোনাচ্ছিলেন। তার রিকশার চাকা খুলে গিয়েছিল রাস্তায়। তিনি তারপরও রিকশায় বসা। সবার চিৎকারে পরে নেমে আসেন। তার ভাষ্যমতে, "আমি ভেবেছিলাম, নাটকে যেমন এ্যাক্সিডেন্ট হলে স্লো মোশনে নায়িকাটা পড়ে যায়, আমিও সেভাবে রিকশা থেকে পড়ে যাব!!!"

এইরকম বায়াসড মহিলা অনেক আছে। বাচ্চাদের স্কুলে যেসব মহিলা বসে আড্ডা দেন, অনেকেই এধরণের। কোন ভাবি আজ কোন সিরিয়ালের নায়িকার ড্রেসটা ম্যানেজ করল, কোন পার্লারে ফেসিয়াল করল, কে কোন রেসিপি শিখল- অতিমাত্রায় মেয়েলী আলাপ যাকে বলে। আর এই সার্কেলের খাতির থাকে উপরে উপরে। ভিতরে চলে জোর প্রতিযোগিতা। কে বেশি সুন্দর, কার বরের পয়সা বেশি, কার বাচ্চার রেজাল্ট ভাল, সব নিয়ে প্রতিযোগিতা আর হিংসা। চাহিদাও থাকে আকাশছোঁয়া। ভুক্তভোগী হয় বেচারা স্বামী আর সন্তান। স্বামীর প্রতি একের পর এক আবদার- অমুক ড্রেস নতুন এসেছে, আমাকে নিতেই হবে, তমুক ভাবীর হাজব্যান্ড কত্ত ভাল, তোমার মত কিপটা না! বাচ্চা একটু এদিক ওদিক করলে, নাজিফা তো এত পেয়েছে, তুমি এত খারাপ করলে কেন! ও তো অনেক খায়, তুমি খাওনা কেন!

Race, Race, Race . . . .

সারাক্ষন প্রতিযোগিতা, কি পেলাম না তার হিসাব কষে কষ্ট পাওয়া, অস্থির জীবনযাপন, হতাশা অথচ ওপর দিয়ে বেশ ফিটফাট।

এই লাইফস্টাইল খুব মারাত্মক। সংসারে কোন বন্ধন থাকেনা। থাকার জন্য থাকা। একই ছাদের নিচে দেহের ব্যবধান হয়ত দুই হাত, মনের ব্যবধান থাকে যোজন যোজন।

collected from sister
ফারিজা বিনতে বুলবুল