চলে গেছ তাতে কি নতুন একটা পেয়েছি

একদিন অনেক রাতে ক্যাম্পাসে মোবাইলে ওয়াইফাই চালাইতেছি দেখি মধুর ক্যান্টিনের ওদিক থেকে একটা বাইকে করে একটা ছেলে আর মেয়ে হৈ হৈ করতে করতে আসছে। মেয়েটা চিৎকার করে গাইছে, "চলে গেছ তাতে কি নতুন একটা পেয়েছি… তোমার চেয়ে অনেক ভাল"।

ঠিক একই জায়গায় আরেক রাতে এক ছেলের কাঁধে মাথা রেখে এক মেয়ে বসে আছে। মেয়েটির ফোন বেজে উঠল। হয়ত তার মা, হয়ত বাবা ফোন করেছিল। এপাশের কথা শোনে অপাশের প্রশ্নগুলো বুঝে নিলাম, "কোথায়?" "এই তো রুমে" "কি করছ?" "নুডুলস বানাচ্ছি!!" আদরের মেয়ে এত রাতে এক পরপুরুষের গা জড়াজড়ি করে বসে আছে এর বদলে "নুডুলস বানাচ্ছে" এই সান্ত্বনায় বাবা মা হয়ত সেদিন আরামেই ঘুমোতে গেছে প্রতিদিন যেমন যায়।

ক্যাম্পাসে কোন এমারজেন্সি কারনে যদি রাতে বের হতে হয় কলাভবনের সামনে দিয়ে, বটতলা, আমতলা ওদিকে কখনো যাইনা। কেমন জানি লাগে। ওরা খারাপ আমি ভাল, ওরা কুকাম করছে আমি নিষ্পাপ ব্যাপারটা এমন নয়। আমার কেবলই মনে হয় এই ছেলে মেয়েগুলো হয়ত আপনার আমার আদরের ভাইটি নয়, আদরের বোনটি নয় কিন্তু কারো না কারো তো বোন, কারো না কারো তো ভাই। এরাও তো কোন না কোন দুর্ভাগা বাবা মায়ের সন্তান। দিনের পর দিন এরা নিজেদের সাথে নিজেদের বাবা মায়েদেরও দুর্ভাগা করে। ছোট বেলা থেকে ওটা কর না, এটা করোনা, ওখানে যাবেনা, এখানে এমন করবে টাইপ কারণহীন, যুক্তিহীন শাসনে বড় হওয়া ছেলেমেয়েগুলো যখন ছাড়া পেয়ে দেশের বিদ্যাপীঠগুলোতে আসে এদের অবস্থা হয়ে যায় বাধা গরু হঠাৎ ছাড়া পাওয়ার মত। মন যা চায় তাই করতে যাওয়া এই ছেলে মেয়েগুলোর প্রতিটি কুকামের পেছনে আছে বাবা মায়েদের মূল্যবোধহীন, নৈতিকতাহীন, জীবনবোধহীন "তোকে জীবনে অনেক বড় হতে হবে" এই সেকুলার হলফনামার মুখস্থ পাঠ।

-- অবুঝ বালক

No comments:

Post a Comment