বিয়ার দাওয়াতে উপহার নিয়ে যেতে কেউ বলে না, কিন্তু ...

"যখন মানুষ মরে যায় তখন এ দুনিয়াতে তার আর কিছুই বাকি থাকে না, শুধু থাকে ইসলামের জন্য তার অন্তরে লুকোনো ভালোবাসা থেকে করা আমলগুলো। আঁধার রাতের আবডালে গুঙিয়ে গুঙিয়ে কাঁদা, আল্লাহর ভয়ে ছোট্ট একটি হারাম ছেড়ে দেয়া, আল্লাহকে খুশি করতে কোন সৎ কাজের জন্য প্রাণপণ প্রচেষ্টা। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কাজ, কিন্তু আল্লাহর চোখে হয়তো অসামান্য! পৃথিবীর মাঝে কেউ কি এগুলোর মূল্য জানে? নাহ্, সেগুলোর কথা শুধু আল্লাহ তা'আলাই জানেন। শেষ পর্যন্ত আল্লাহর সাথেই আমাদের সকল হিসাব, আল্লাহর কাছেই চূড়ান্ত প্রত্যাবর্তন।"

--- একজন মুসলিমাহ বোন

বিয়ার দাওয়াতে উপহার নিয়ে যেতে কেউ বলে না, কিন্তু অনুস্ঠান স্থলে ঢুকতেই টেবিল আর খাতা কলম থাকে।

-- মাজহার ভাই

দপ্তরবিহীন মন্ত্রী থাকিতে পারিলে, চাকুরিবিহীন বেকার জামাই কেন গ্রহণযোগ্য হইবে না?

-- জুবাইর তারিফ

ধর্ষিতাকে যদি উন্নত চিকিৎসার জন্য সিংগাপুর নেওয়া লাগে,ধর্ষককে উন্নত বিচারের জন্য সৌদি আরব নেয়া হবে না কেন?

[সংগৃহীত]


আমি কি বললাম, তার দায়ভার সম্পূর্ণ রূপে আমার। তবে তাতে আপনি কি বুঝলেন, সেটার দায়ভার সম্পূর্ণ রূপে আপনার।

- স্যার ভিকিয মব

আমাদের কবরের উপরেও একদিন ফুটবে সাদা ঘাসফুল, বাসা বাঁধবে একদল তরুণ সৈনিক পিঁপড়ে।

খুব বেশী দূরের গল্প নয়।

--- মহিব উল্লাহ খান

বয়ফ্রেন্ড

মা বলল, মাথায় কাপড় দিয়ে বাইরে যাও।

মেয়ে মাথায় কাপড় দিলনা।

বাবা বলল, ভাই বলল..........

তাও না.........



বয়ফ্রেন্ড, "তুমি এখন থেকে হিজাব পড়ে আসবে"

কেন?

-কেউ তোমার দিকে নজর দিক তা চাইনা।

.

..

মা, আমি বোরকা সেলাই করব।

মা- খুশি হয়ে,,আলহামদুলিল্লাহ....



.

..

বয়ফ্রেনড- হাতটা দাও।

ইতঃস্তত......

বয়ফ্রেন্ড- আমার সাথে কিসের ভয়.......!!!!!!!!





--- সারাহ রুবাইয়া





#বিষ্ময় -- সমাজে এখন চলছে এমনই...!!

সুন্দরী প্রতিযোগিতা

সুন্দরী প্রতিযোগিতা হয় না ? সাদাসিধে আবেগী মেয়েরা তখন ভাবে,"আমি কতোটা আত্ববিশ্বাসী, স্মার্ট, বাকপটু সেটাই প্রমাণ হয়ে যাবে" "আমি দেখিয়ে দিবো আমি নিজেকে আকর্ষণীয় ভাবে হাজির করতে পারি সবসময়" "আমিই হবো সেরা" ইত্যাদি ইত্যাদি...কিন্তু কী জানেন, কালো একটা মেঘে মন ছেয়ে যায় যখন দেখি বোকা মেয়েগুলিকে আসলে "ব্যবহার" করা হচ্ছে, কিন্তু ওরা বুঝতেও পারছে না! পোকা যেমন আগুনের আলো দেখলে লাফিয়ে পড়ে, এই মেয়েগুলিও তেমন। সমাজের বিভিন্ন নামী-দামী বড় বড় কোম্পানিগুলো এইসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, তারপর এর প্রচার, প্রসার, বিজ্ঞাপন করে ঢালাওভাবে... ফলস্বরুপ- মেয়েদের কাছে এটা তখন স্বপ্নের মত মনে হয়! তাদেরকে এতো গ্ল্যামারাসভাবে দেখানো হয় সবকিছু যে তারা কনভিন্সড হতে বাধ্য! মানুষ তো সহজেই বিশ্বাস করে, আর মেয়েরা আরো বেশি কল্পনাবিলাসী। তারা ভাবে এই স্বপ্নরাজত্বে সেই-ই হবে নায়িকা! অথচ বাস্তবে কি হয়? আগুনের আলোটা দেখতে যেয়ে এর সীমাহীন উত্তাপের কথাটা তার আর মাথায় থাকে না। ফটোসুন্দরী, বিশ্বসুন্দরী এসব প্রতিযোগিতায় জিতে যেয়েও তাকে হতে হয় কয়েকটি পণ্যদ্রব্যের "হ্যাঙ্গার" মাত্র!!


- আনিকা ওয়ার্দা তুবা

আপু,আমি ঠিক করেছি কোনদিন বিয়েই করবনা

-আপু,আমি ঠিক করেছি কোনদিন বিয়েই করবনা।

-আমি বললাম, কেন?

-আরে ধুর!যে ছেলের সাথে বিয়ে হবে সে যে বিয়ের পরে অন্য কোন মেয়ের সাথে

সম্পর্ক রাখবেনা তার গ্যারেন্টি কি বলো?

-হুম এটা তো আসলেই অনেক বড় একটা সমস্যাই বটে।

-আরে তুমি জানোনা আপু ছেলেদেরকে কোন বিশ্বাস নাই বুঝলা, ঘরে বউ থাকলেও

ছেলেদের মন অন্য মেয়েদের পেছনে ঠিকই ঘুর ঘুর করে।

-আমি বললাম সত্যিই তো খুবই বড় সমস্যা এমনটা তো চারিদিকে হচ্ছেই....

-হুম সেইজন্যই তো বলছি এত অনিশ্চয়তা এত অবিশ্বাস আমি বাবা নিতে পারবনা,

তাই ঠিক করেছি আমি বিয়েই করবনা।

-আমি বললাম তাহলে আপু এক কাজ কর যেসব ছেলেরা মেয়েদের দিকে তাকায়না,

নিজেদের চোখ,মন আর নফসকে সবসময় আল্লাহর ভয়ে হিফাজত করে চলে তাদেরকে বিয়ে

কর তাহলে দেখবা কোন সন্দেহ অবিশ্বাস......



সে আমার কথা শেষ করতেই দিলো না তার আগেই চিত্‍কার করে উঠল "না না আপু আমি

তোমার মত না বুঝলা আমি একজন নরম্যাল ছেলেকে বিয়ে করতে চাই কোন হুজুরকে

বিয়ে করতে আমি পারবোনা"।



কাল রাতে কাজিনের সাথে এসব নিয়ে কথা হচ্ছিল।



সমস্যাটা কোথায় আর সমাধানটা যে কি তা তারাও বোঝে কিন্তু তারপরেও সেই

সমধান গিলতে এত অনিহা?এত অনিচ্ছা?

এত অপছন্দ?



......এদের এসব কথায় একটুও কষ্ট তো পাইনা বরং পেছনে ফেলে আসা পুরনো

জীবনের আমার সেই আমিত্বটাকেই আবার চোখের সামনে দেখতে পাই আমি।



হ্যাঁ আমিও তো তাদের মতনই ছিলাম।



......মা'বুদ তুমি তো আমাকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছো,

এই হৃদয় তো এখনও যেমন আছে আগেও তো এমনই ছিল কিন্তু এভাবে অনুধাবন করার মত

বোধ....সব কিছু এভাবে উপলদ্ধি করার মত ক্ষমতা, দেখার মত দৃষ্টি যদি তুমি

আমাকে না দিতে তাহলে তো জীবনের মানেটাই অর্থহীন পড়ে থাকত.....



যা আগে দেখতাম, যেভাবে বুঝতাম সবই তো ছিল অর্থহীন.... সেই অনুভূতি নিয়েই

তো পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে পারতাম

....যা দিয়েছো তাতো শুধুই তোমার অনুগ্রহ, তোমার দয়া,এর শুকরিয়া জীবনভর

করে গেলেও তো শেষ হবার নয়.....।



তাদের জন্য শুধু দোয়া করেই যাবো ......যারা এখনও জীবনের মানে জানলো

না.....আলোকিত জীবনের স্বাদ পেলো না......।



--- ইসরাত জাহান

এত অসম্মান সহ্য করেও মানুষ ইসলাম পালন করে কেন?

কখনো ভেবেছেন, এত অসম্মান সহ্য করেও মানুষ ইসলাম পালন করে কেন? হিজাব দিলে মানুষ হাসাহাসি করে। দাড়ি রাখলে তো কথাই নেই! পড়ালেখাটা যদি একটু ইসলামী লাইনের হয় তাহলে তো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে চাকরি -- এমনকি বিয়ের বাজারে পর্যন্ত দর কমে যায়।

আর উঠতে বসতে কাপড় নিয়ে, সামাজিকতা নিয়ে, দুনিয়ার বাস্তবতা নিয়ে যত লেকচার শুনতে হয় সেসবের কথা নাহয় ছেড়েই দিলাম!! এতটা এরা সহ্য করে কেন??

কারণ, এরা যখন ঈমান এনেছে, একথা মনে প্রাণে জেনে এবং বিশ্বাস করেই এনেছে যে সম্মান দেয়ার মালিক আল্লাহ, মানুষ না! আর কোনও কাজের প্রতিদান দেয়ার মালিকও আল্লাহ, মানুষ না! মানুষের দেয়া সম্মান বা অসম্মান এই বিশ্বাসের কাছে মুখ থুবড়ে পড়ে!


--- নায়লা নুজহাত

মেয়েরা হিজাব দিয়েই সব কিছু করতে পারে??

"মেয়েরা হিজাব দিয়েই সব কিছু করতে পারে--" কথাটা প্রায়ই বলে থাকেন অনেকে। কথাটা কিন্তু, ভুল!! আর এই ভুলের হাত ধরে এখন আরও নতুন নতুন ভুলের পথ তৈরি হচ্ছে। যেমন হিজাব দিয়ে অলিম্পিকে গেমসে অংশগ্রহণ করা, হিজাব দিয়ে সুন্দরী প্রতিযোগিতা করা! বহু আগে পেপারে দেখেছিলাম কোনও এক মুসলিম দেশে হিজাবী মেয়েদের গানের দল বের হয়েছে, কিন্তু তারা গান গাইবার আগে বয়ফ্রেন্ডদের অনুমতি চেয়ে নেয়! এমন আরও অনেক কিছুই আজকাল হচ্ছে! এমন অনেক পরিবেশেই মেয়েদের দেখা যাচ্ছে যেখানে তাদের যাওয়ার কথা না, কেবল এই একটা ভুল যুক্তিতে!! 'হিজাব দিয়ে সব করা যায়'! না! হিজাব হল হিজাব। আর "হালাল-হারাম" বলে আরেকটা অবশ্য-বিবেচ্য বিষয় আছে!! হিজাব দিয়ে সব করা যায় না!!! যা কিছু আল্লাহ মেয়েদের জন্য হালাল করেছেন, আর সেখানে হিজাবের হুকুমও প্রযোজ্য, সেই কাজগুলো হিজাব দেয়া অবস্থায় করা সম্ভব, করা যায়, করতে হবে! যেই কাজটা হালালই নয়, প্রশ্ন সেখানে কেবল হিজাব দেয়া হল কি হল না, সেটার না! "বিসমিল্লাহ" বলে মদ খেলেই যেমন মদটা হালাল হয়ে যাবে না, হালাল হবে না মদ খাওয়ার কাজটাও, তেমনি হিজাব দিয়ে একটা হারাম কাজ করলে "হিজাব দেয়া আছে" এই মর্মে সেই হারাম কাজটা হালাল হয়ে যাবে না! 

--- নায়লা নুযহাত

প্রসঙ্গ : প্রবৃত্তি

আমাদের প্রবৃত্তিকে নিয়ে বড় বেশী টানা হেঁচড়া খেলা হচ্ছে। আমাদের জীবনাদর্শ ইসলাম বলছে "খালওয়া" বা একান্তে নারী-পুরুষের মেলামেশা নিষিদ্ধ, ইসলাম বলেছে চরিত্রই সবচেয়ে বড় সম্পদ, ইসলাম বলেছে দৃষ্টিকে অবনত রাখতে, ইসলাম বলেছে ফ্রী মিক্সিং না করতে, ইসলাম বলেছে লজ্জা স্থানের হিফাজত করতে। আমাদের মুরব্বীরা, আমাদের সমাজও তাই বলছে। এদিকে আমাদের প্রবৃত্তি আমাদেরকে টানছে উল্টোদিকে। অনেক কষ্টে যখন আমরা আমাদের প্রবৃত্তিকে দমাচ্ছি ঠিক তখন আমাদের প্রবৃত্তিকে পুনরায় শতগুনে জাগিয়ে দিচ্ছে বিনোদন জগতের দেহ ব্যবসায়ীরা। 

তাদের নগ্ন দৈহিক প্রদর্শন যেমন লাক্স সাবানের গুনাবলীর কথা বলে, তেমনি ঐ অর্ধনগ্ন নারীর অসংলগ্ন দৈহিক প্রদর্শনীর মাধ্যমে এমনই একটি নারীর সয্যা সঙ্গের বাতিক জাগিয়ে দেয়। একই ভাবে নাটক সিনেমার হৃদয়গ্রাহী কাহিনী এবং চরিত্র আমাদেরকে প্রতি মুহুর্তে একটি অন্তরঙ্গ সম্পর্কের চাহিদা শতগুনে বাড়িয়ে দেয়, ভালোবাসতে প্রবল বেগে উৎসাহিত করে, আপন কাউকে খুজে পেতে আরও তৃষ্ণার্ত করে তোলে। প্রতিদিন এ কাজটা একবার দুবার নয় বরং হাজারটা বার আমাদেরকে এটা আক্রমন করছে। 

--অকপট শুভ্র ।

এখনকার প্রেম আর আবেগের বেচাকেনা বিষয়গুলো অনেক সস্তা

এখনকার প্রেম আর আবেগের বেচাকেনা বিষয়গুলো অনেক সস্তা। ফেসবুকে বেশি মিউচুয়াল আছে দেখে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠায়। এক সপ্তাহ চ্যাট এ কথা হয়ে রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস চেন্জ। এরপর যা হবার তাই। কিছুমুহূর্ত ঘনিষ্ঠ সময় কাটিয়ে আবার নতুন কোন মুখ খোঁজা।

আমরা আবেগের জোয়ারের সময় বাঁধ দিতে জানি না, আবার ভাটার সময় নিজেকে ধরে রাখতে পারি না। এই সমাজে একটা মেয়েকে গার্লফ্রেন্ড হিসেবে প্রপোজ করা যতটা সহজ, নিজের স্ত্রী হিসেবে মেয়ের ওয়ালীদের (অভিভাবক) কাছে দ্বারস্থ হওয়া ঠিক ততটাই কঠিন। আর শয়তানের চাল তো থাকছেই।

একটা ছেলে কিংবা মেয়ের শারীরিক পরিবর্তনের ধাপগুলো ক্রমান্বয়ে পার হয়ে আসার পর কিভাবে প্রতিটা মুহূর্ত পার করে তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানে। যারা পারে তারা এসব বয়ফ্রেন্ড কিংবা গার্লফ্রেন্ড এর কাছে। আর যারা পারে না তারা পর্ণ কিংবা হলিউডের গলিতে ঢু মারে। গা বাঁচিয়ে চলা মানুষ খুবই নগন্য।

অথচ "বিয়ে" এর মাধ্যমে আল্লাহপাক কত সহজ করে দিয়েছেন দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের বোঝাপড়ায়। দায়িত্ব যে এখন নিতে পারে না, আর দশ বছর পরও তার কাছ থেকে খুব বেশি কিছু আশা করা যায় না। যেই ছেলে গার্লফ্রেন্ড এর সাথে সারারাত ফ্রি টক টাইম ইউজ করে, দিনের বেলা ফুচকা খেতে পারে, সারাদিন খবর নিতে পারে, এত্ত শেয়ারিং কেয়ারিং করতে পারে সেই মেয়েকে বিয়েতে এত আপত্তি কেনো?


courtesy : প্রেম নয়, বিয়ে করুনঃ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করুন

জীবন ছায়াছবির মত চলবে না

আমার বয়স তখন সাত-আট বছর হবে। বাসার টিভিতে বাংলা ছায়াছবির গান চলছে। সেই গানের বর্ণনা না দেয়াই উত্তম! আমি প্রশ্ন করলাম, "নায়ক নায়িকা যখন নাচে ঠিক তখনই বৃষ্টি হয় কিভাবে??" আমাকে সবাই ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিলেন। এমন পাকা একটা প্রশ্ন করার জন্য বিরক্তও। প্রশ্নটা কিন্তু অস্বাভাবিক ছিল না!! পরে আরও বড় হয়ে জেনেছি যে রোমান্টিক গানের বৃষ্টিগুলো হাইলি আনরোমান্টিক পদ্ধতিতে তৈরি! আর আরও পরে বুঝেছি যে নাটক সিনেমার সবটুকুই হল কারসাজির ব্যাপার। না এর কাহিনী সত্য, আর না পরিস্থিতি। হ্যাঁ, বাস্তবের সাথে মিল রেখেই তৈরি করা হয়। কিন্তু কিছু ইমোশনাল টাচ দিয়ে যা বাস্তবে পাওয়া মুশকিল!

সিনেমায় খল নায়ক মারা যাবে, শাস্তি পাবে। বাস্তবে সেটা হয় না সাধারণত।আচ্ছা সেসব বাদ দিলাম। সিনেমায় ঠিক পারফেক্ট সময়ে পারফেক্ট বৃষ্টিটা হবে।দুঃখের মাঝেও ঘরের বউকে দেখতে লাগবে পরীর মত সুন্দরী! আবার ভালবাসার
ক্ষেত্রে নায়ক নায়িকা শেষ পর্যন্ত একত্রিত হবেই-- প্রয়োজনে কোনও কোনও চরিত্র মারা যাবেন যেন তারা বিনা বাধায় ঘর বাঁধতে পারে! আরও কত হাবিজাবি!



মুশকিল হল, এইসব হাবি জাবি দেখে বড় হওয়া আমরা মনে করি আমাদের জীবনটা হতে হবে সেই তিন ঘণ্টার স্বপ্নের মত সুন্দর মুভির মতই রোমান্টিক! সবকিছু পারফেক্ট ভাবে চাই! অথচ পুরো বিনোদনের ব্যাপারটাই সাজানো এবং কৃত্রিম! যার বৃষ্টিটা পর্যন্ত পানির ট্যাঙ্ক থেকে নামানো লাগে, সেটা কিভাবে পারফেক্ট হতে পারে, এ প্রশ্ন আমাদের মাথায় আসে না! আর নিজের জীবনটা মুভির মত হবে-- এই স্বপ্ন দেখে কেবল যে আমরা বাস্তবতা থেকে দূরে সরে যাই তা তো না! জীবনটা মুভির মত না হয়ে "জীবনের" মতই হয়েছে, এই হতাশায় ডুবে আল্লাহর পারফেক্ট প্ল্যানকেও অবজ্ঞা করে বসি!


জীবন ছায়াছবির মত চলবে না, আল্লাহ যেমন চান, ঠিক তেমনভাবেই চলবে--- এটাই সত্য, আর এটাই বাস্তব! এটা পৃথিবী! পারফেক্ট জীবনের জন্য জান্নাত আছে। আর সেটা এই পৃথিবীতে "পারফেক্ট" কথাটার যত সংজ্ঞা আছে, সেসবের চাইতেও অনেক, অনেক, অনেক পারফেক্ট!

--- নায়লা নুজহাত

অদ্ভুত সুন্দর এক গল্প

একই হাসপাতালে দুইজন ব্যাক্তি ছিল পাশাপাশি বিছানায়। দুইজনই কঠিন রোগে আক্রান্ত। একজন প্রতিদিন ১ ঘন্টার জন্যে উঠে বসতো তাঁর ফুসফুসের পানি বের হয়ে যাবার জন্যে। রূমটির একমাত্র জানালা ছিল তার বিছানার পাশেই। অন্য ব্যক্তিকে সারাদিনই কাটাতে হত বিছানায় শুয়ে। দুইজনেই ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলত। তারা তাদের স্ত্রী-পরিবার নিয়ে কথা বলতো, চাকরী বাকরী, সামরিক বাহিনীতে তাদের কাজ, ছুটি কাটানোর স্থান ইত্যাদি নিয়ে তারা কথা বলতো।

প্রতিদিন বিকেলে যখন জানালার পাশের বেডের ব্যক্তিটি উঠে বসতো, সে অন্যজনকে জানালার বাইরে যা যা দেখতে পেত তা তা বর্ণনা করতো। অন্য বেডের ব্যক্তি শুধু এই একটি ঘন্টার জন্যেই বাঁচতে লাগলো যে একটি ঘন্টায় তার জীবনটা বিস্তৃত হয়ে যেতো আর বাইরের জগতের রঙ আর সজীবতায় মুখর হয়ে উঠতো।  জানালাটা দিয়ে একটা বিশাল উদ্যান দেখা যেতো, যাতে একটা নিটোল দীঘি ছিল। সেই দীঘিতে হাসেরা খেলা করতো আর বাচ্চারা খেলনা নৌকা ভাসিয়ে দিত। অনেক দূরে চোখ পাতলে শহরের আকাশের একটা চমৎকার নীল দৃশ্য দেখা যেত।

যখন জানালার পাশের ব্যক্তিটি এইসব অসাধারণ বর্ণনা দিত, রূমের অন্য পাশের ব্যক্তিটি চোখ বুজে এইসব দৃশ্য তার মনের আকাশে কল্পনা করতো। মনের চোখ দিয়ে দেখতো। এক উষ্ণ বিকেলে জানালার পাশের ব্যক্তিটি একটি প্যারেড যাবার বর্ণনা করলো। যদিও অন্য ব্যক্তিটি ব্যান্ড শুনতে পেতনা, তবুও জানালার পাশের ব্যাক্তিটির অপূর্ব বর্ণনার কারণে সে মনের চোখ দিয়ে সব দেখার চেষ্টা করতো।  দিন গেল, সপ্তা গেল, মাস গেল। একদিন সকালে যখন নার্স যখন তাদের গোসলের পানি দিতে এলো, সে জানালার পাশের ব্যক্তিটির নিথর দেহ পরে থাকতে দেখলো। শান্তির ঘুমের মাঝেই সে চিরশান্তির জগতে চলে গেল। নার্স চটজলদি হাসপাতালের কর্মীদের ডেকে মৃতদেহ সরিয়ে ফেলল।

যখন সঠিক সময় এল, অন্য ব্যাক্তিটি নার্সের কাছে জানতে চাইলো তার বেড জানালার পাশের দেয়া যায় কিনা। নার্স খুশিমনেই তাকে জানালার পাশে সরিয়ে দিল আর তার সকল সুবিধা নিশ্চিত করে তাকে একা রেখে চলে গেল। ধীরে ধীরে, কষ্ট করে, সে নিজের কনুই এ ভর দিয়ে বাস্তব জগতে প্রথম দৃষ্টি ফেলতে উঠে বসলো। চিন্তিত, উত্তেজিত ব্যক্তিটি ধীরে ধীরে জানালার বাইরে চোখ রাখলো।

সে একটা সাদামাটা দেয়াল ছাড়া কিছুই দেখতে পেল না।  সে নার্সকে ডেকে জিজ্ঞাসা করল এমন কি কারণ হতে পারে, যার জন্যে তার অসুস্থ রূমমেট ব্যক্তিটি এমন অদ্ভুত সুন্দর শৈল্পিক কাল্পনিক উপায়ে বাইরে জগতকে বর্ণনা করত? নার্স বলল, সে ছিল অন্ধ। হয়তো সে তোমাকে উৎসাহিত করতে চেয়েছিল। 

শিক্ষাঃ নিজের সীমাবদ্ধতা, দুঃখ কষ্ট থাকা স্বত্বেও অন্যকে খুশি করার মাঝে একটা অসম্ভব আনন্দ কাজ করে। দুঃখ বাটলে তা অর্ধেক হয়ে যায় আর সুখ বাটলে তা হয়ে যায় দ্বিগুণ। আপনি যদি ধনী হতে চান, আপনার শুধু সেইসব সম্পদ গুনতে থাকুন যা টাকা দিয়ে কেনা সম্ভব নয়। 

Yesterday is history
Tomorrow is a mystery Today is a gift.
That's why we call it 'Present' 

[Collected and translated from the page The Idealist]
translated by : Nazmus Sakib

আমাদের সমাজে আজকালকার বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোর মত বড় ফিতনা বোধহয় দ্বিতীয়টি নেই

আমাদের সমাজে আজকালকার বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোর মত বড় ফিতনা বোধহয় দ্বিতীয়টি নেই। হিন্দু কালচারের মত 'গায়ে হলুদ' জাতীয় অর্থহীন আচার থেকে শুরু করে গানবাজনা, ফ্রি মিক্সিং-কিছুই বাদ নেই। নারীরা যেন তাদের সমস্ত রূপ যৌবন নিয়ে ধরা দিতে চান এসব অনুষ্ঠানে। শুধু বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য পার্লারে যেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে সাজগোজ আর টাকার শ্রাদ্ধ-এসব এখন খুবই কমন ব্যাপার। অথচ এই নারীদের সৌন্দর্য উপভোগের একমাত্র যিনি হকদার ছিলেন, সেই স্বামীর ঘরে তাঁরা সবচেয়ে দীনহীন বেশে থাকতে পছন্দ করেন।

মধ্যবয়স্কা নারীরা যখন পার্লারে গিয়ে অল্পবয়স্কা তরুণী সাজতে চান, আমার মনে পড়ে একটা গল্পের কথা।

সম্রাট আকবর চুলে কলপ লাগানো শুরু করেছেন বয়স বেড়ে যাওয়ায়। একদিন অন্দরমহলে তিনি কলপ লাগাচ্ছেন, তখন বীরবল হঠাৎ ঘরে ঢুকে পড়লেন। বাদশাহ অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন আর কলমের কৌটা লুকিয়ে রাখলেন। তারপর বললেন-"ইয়ে মানে বীরবল, আচ্ছা, চুলে কলপ দিলে কি মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে?"

বীরবল মুচকি হেসে বললেন, "মহারাজ, ভয় নেই।"

- কীসের ভয় নেই?

- মস্তিষ্কের ক্ষতির ভয় নেই। কারণ যারা চুলে কলপ লাগায় তাদের আসলে মস্তিষ্ক নামক বস্তুটাই নেই। কাজেই ক্ষতি হওয়ার প্রশ্ন আসে কীভাবে?

- মস্তিষ্ক নেই মানে?

- হুজুর, মস্তিষ্ক থাকলে কি আর বাজে কাজে সময় নষ্ট করত? যে সময় চলে গেছে তাকে কি ফিরিয়ে আনা যায়? নদীর যে স্রোত চলে গিয়েছে তাকে কি আবার ফিরিয়ে আনা যায়?

বাদশাহ লজ্জিত হলেন। কিন্তু আমরা লজ্জিত হতে নারাজ। সত্যিই আমরা লোকের দেখনদারির পেছনে কতটা সময় নষ্ট করি চিন্তা করলে শিউরে উঠতে হয়। একটা পার্টিতে যেতে হলে সাজগোজের পেছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেরিয়ে যায়, অথচ কুরআনের একটা ছোট্ট সূরা বুঝতে আধঘণ্টা সময় আমাদের হয় না।

আজকালকার মা বোনেরা যে পরিমাণ সময় সিরিয়াল দেখে, সাজগোজ করে আর পরচর্চা করে কাটান, তাতে হয়তো বীরবল বেঁচে থাকলে এদের দেখেও বলতেন-"মস্তিষ্ক নামক কোন পদার্থ নেই।"

একটা গাড়ির পেছনে লেখা দেখেছি-

"Mosques are free but empty, and clubs are paid but full. It's amazing that we ignore Jannah which is free but buy Jahannam with money."

সত্যি, কতবড় মস্তিষ্কহীনই না আমরা !!

প্রেম কাহিনী

"নাটক-সিনেমা আর বইপুস্তকে হিবিজিবি একগাদা প্রেমের কাহিনী দেখে বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েরা প্রেম-প্রেম চোখে ডানে বামে তাকাতে থাকে, যাকে দেখে তাকেই প্রেমিক/প্রেমিকা মনে করে। প্রেম করতেই হবে, এরকম চিন্তা মাথায় নিয়ে বড় হচ্ছে একটা বিশাল প্রজন্ম। গার্ল ফ্রেন্ড না থাকলে অনেক ছেলেই "বোকা"। আবার "বয়ফ্রেন্ড" না থাকলে অনেক মেয়েই "আনস্মার্ট" হয়ে যায় একটা প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে।

নাটক, সিনেমা, সিরিয়াল আর প্রেমের গল্পে ডুবে থাকলে ওরা কীভাবে বুঝবে এইসব ছ্যাবলা ইমোশনের আউটকাম সবচাইতে ভালো ক্ষেত্রে পরস্পরের উপরে বোর হয়ে যাওয়া, পরকীয়া করা। আর নাহয় হারিয়ে ফেলা চরিত্র ও শরীরের অমূল্য কিছু জিনিস, ইউটিউবে ভিডিও হয়ে যাওয়া।"

- সাফওয়ান


কাউকে ভাল লাগতেই পারে। মনে হতেই পারে ডাগর ডাগর চোখ, মেঘবরণ কেশ, রূপচান্দা মাছের লাহান চরন যুগল! কাউকে দেখে বুক ধড়ফড় করতেই পারে। হাঁটু জোড়া কাঁপতেই পারে। ঘন ঘন পেতে পারে পানির পিপাসা! কিন্তু মূল বিষয়টা হইল কি এই"কাউকে ভাল লাগে" এটা থেকে"দোস্ত জিনিশটা কেমন" বলে বন্ধুদের সাথে জাহেল আলোচনা, প্রেম পত্র চালাচালি, চল দেখাকরি- প্রেম করি টাইপ মাখামাখি, কুটুম কুটুম প্রেমের প্রেমমালার ষোলকলা পূর্ণ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টার অত্যাচারে মোবাইল ফোনের ব্যাটারির মেয়াদ কমিয়ে আনতে মাইয়ার ফোন নাম্বার নিয়ে টানাটানি আর মাইয়ার ফেসবুকে লুকোচুরি বাদ দিয়ে ওয়ালীর সাথে যোগাযোগের দিকে মনোনিবেশ করুন। বিয়ার পবিত্রবন্ধনে বেঁধে প্রিয় মানুষটিকে আপন করে নেওয়াই মুমিনের বৈশিষ্ট্য। পিরিত পিরিত খেলা শয়তান খেলে___ মুমিন নহে!! প্রেম নয়, বিয়ে করুনঃ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করুন ...

- বুঝতেছিনা বিষয়টা


​ মহিলাটি নিঃশব্দে ট্রেনে উঠে পড়ল

​​
মহিলাটি নিঃশব্দে ট্রেনে উঠে পড়ল; যদি তার চোখে চোখ না পড়ে যেত, আমি বুঝতেও পারতাম না যে তার চোখ ছলছল করছিল। যেকোনো মুহূর্তে সেই অশ্রু যেন ঝরে পড়বে। আমি তার পায়ের দিকে তাকালাম, দেখলাম খালি পা, এক জোড়া জুতা তার হাতে। কোলে কম্বলে মোড়ানো একটি ছোট শিশু; শিশুটি কোন শব্দ করছেনা। মহিলাটি যাত্রীদের কাছে এসে নিচুস্বরে কি যেন বলছিল, কিন্তু তার কথা ফেরিওয়ালার কণ্ঠ ঢেকে দিচ্ছিল। মহিলাটি ট্রেনের এক পাশে আমার কাছাকাছি আসলো। তার পুরনো ব্যবহৃত ক্ষয়ে যাওয়া জুতা জোড়ার দিকে লজ্জিতভাবে তাকিয়ে আস্তে বলল, 'কারও কি এটা লাগবে? কেউ কি আমার কাছ থেকে জুতা তা কিনবেন?' সবাই বিব্রতভাবে না করে দিল, কেউ বুঝে পেল না কেনই বা কেউ ব্যাবহার করা, পুরনো, ক্ষয় হয়ে যাওয়া জুতা কিনবে। অন্য একজন মহিলা ব্যাগ থেকে কিছু টাকা বের করে তাকে দান করতে চাইল। কিন্তু মহিলাটি এমন কিছু গ্রহন করতে অস্বীকার করল; তার ঘুমন্ত শিশুর হাতের মধ্যে দেওয়ার পরও সে তা ফিরিয়ে দিল। সে তখন জুবুথুবু হয়ে পরাজিতের মত ট্রেনের দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।

মহিলাটি তার মুখ এমনভাবে নীচু করে রাখল যেন অন্য যাত্রীরা তার চোখ থেকে গড়িয়ে পরা অশ্রু দেখতে না পায়। তখন একজন মহিলা তার কাছে এগিয়ে গিয়ে আস্তে করে বলল, 'আমি তোমার কাছ থেকে জুতা জোড়াটা কিনব।' তখন জুতা হাতে সেই মহিলাটি আশান্বিত হয়ে জিজ্ঞেস করল, 'কিনবেন, তাইতো? আপনি কিনে নেবেন? দান না তো, আমি কিন্তু ভিক্ষা চাচ্ছি না।' অন্য মহিলাটি তখন হেসে মাথা ঝাকাল, তারপর বড় একটি নোট তার হাতে গুজে দিয়ে জুতা জোড়া হাতে নিয়ে চলে গেল।

এইমাত্র ঘটে যাওয়া ঘটনাটি দেখে সঙ্গে সঙ্গে আমার মাথায় কুরআনের একটি আয়াত ঘুরতে লাগলোঃ

"যারা আল্লাহর পথে অবরুদ্ধ রয়েছে বলে ভূপৃষ্ঠে গমনাগমনে অপারগ সেই সব দরিদ্রদের জন্য ব্যায় কর; (ভিক্ষা হতে) নিবৃত থাকার কারণে অজ্ঞ লোকেরা তাদেরকে অবস্থাপন্ন মনে করে, তুমি তাদেরকে তাদের লক্ষণের দ্বারা চিনতে পার, তারা লোকের নিকট ব্যাকুলভাবে যাচ্ঞা (ভিক্ষা করে না) করে না এবং তোমরা শুদ্ধ সম্পদ হতে যা ব্যায় কর বস্তুতঃ সে সমস্ত বিষয় আল্লাহ সম্যকরূপে অবগত।" [সূরা বাকারাঃ ২৭৩]

আমি জানিনা এই মহিলার ঘটনা কি, টাকাটা তার কেন দরকার, অথবা টাকাটা দিয়ে সে কি করবে; আমি যা জানি তা হল তার চোখে যন্ত্রণার চিহ্ন, তার কাধে যেন অনেক ভারী বোঝার ভার। এই আয়াতটি আমি আগে বহুবার পড়েছি, এই আয়াত নিয়ে বহু আলোচনা শুনেছি, কিন্তু কখনও এই আয়াতের ওজন বুঝিনি; আজ বুঝলাম যখন আমার চোখের সামনে আয়াতটিকে এভাবে জলজ্যান্ত ঘটে যেতে দেখলাম।

আবারও আমার মাথায় নানান কথা ঘুরতে থাকল, এবার হাদিসের কথা। আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, একজন লোক এসে রাসুল (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করল, আমি কি আমার উট বেঁধে রাখব আর তারপর আল্লাহর উপর তাওাক্কুল রাখব, নাকি উটকে খোলা ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর উপর তাওাক্কুল রাখব? উত্তরে রাসুল (সাঃ) বললেন, 'তাকে বেঁধে রাখ, এবং সেই সাথে আল্লাহর উপর তাওাক্কুল রাখো।' [তিরমিযী]

মহিলাটির জন্য হাল ছেড়ে দেওয়াই সহজ ছিল, যদি সে এইটা ভাবত যে তার কাছে বিক্রি করার মতও কিছু নেই, কাজেই এমন কোন উপায় নেই যাতে সে কিছু টাকা পেতে পারে। তা সত্ত্বেও সে এই হাদিসটি বাস্তবায়িত করে দেখাল। তার কাছে যাই অকিঞ্চিৎকর ছিল তাই সম্বল করল, যেটা আসলে ট্রেনের যাত্রীদের কাছে মুল্যহীন ছিল। সে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখল, এবং এমন মুল্য পেল যা সে দর কষাকষি করে কখনই পেতে পারত না। যেমন, আল্লাহ সুবহানা ওয়াতা'আলা বলেনঃ

"...যে আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার পথ সহজ করে দিবেন। আর তাকে তার ধারনাতীত উৎস হতে দান করবেন রিজিক; যে ব্যাক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করে তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, আল্লাহ তার ইচ্ছা পুরন করবেনই, আল্লাহ সবকিছুর জন্য স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা।" [সূরা তালাকঃ ২-৩]

ট্রেনের মধ্যে নিজস্ব ব্যাক্তিগত সমস্যা সমাধানে ব্যাস্ত এক অচেনা মহিলা আমাকে কয়েক মুহূর্তের মধ্যে কত গভীর শিক্ষা দিয়ে গেল। সেই মহিলার হাতে খুব সামান্য কিছুই ছিল, কিন্তু আমি এটা বলতে পারি, তার অন্তর পরিপূর্ণ ছিল। তার কাছ থেকেই আমারা বুঝতে পারি, সব কিছু দেওয়ার ক্ষমতা শুধুমাত্র আল্লাহর- তিনি তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী দেন, আমাদের আশা অনুযায়ী নয়। আমরা যদিও ভাবি, কোন পরিস্থিতিতে আমাদের হয়তো তেমন কিছুই করার নেই, আমাদের আবার ভেবে দেখা উচিত। কারণ আল্লাহ আমাদের সেই সামান্য পুঁজিই আমাদের আশাতীত হারে বহুগুনে বাড়িয়ে দিতে পারেন। এবং সবশেষে আমরা সেই সব অভাবী মানুষ সম্পর্কে চিন্তা করব যাদের কথা আল্লাহ বলেছেন, তাদের অন্তরের সেই ব্যাখ্যাতীত সৌন্দর্যের কথা ভাবব যেমন এই মহিলাটি দেখিয়েছেন।

- রিহাব রামাদান

আমাদের সমাজে আজকালকার বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোর মত বড় ফিতনা বোধহয় দ্বিতীয়টি নেই

আমাদের সমাজে আজকালকার বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোর মত বড় ফিতনা বোধহয় দ্বিতীয়টি নেই। হিন্দু কালচারের মত "গায়ে হলুদ" জাতীয় অর্থহীন আচার থেকে শুরু করে গানবাজনা, ফ্রি মিক্সিং-কিছুই বাদ নেই। নারীরা যেন তাদের সমস্ত রূপ যৌবন নিয়ে ধরা দিতে চান এসব অনুষ্ঠানে। শুধু বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য পার্লারে যেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে সাজগোজ আর টাকার শ্রাদ্ধ-এসব এখন খুবই কমন ব্যাপার। অথচ এই নারীদের সৌন্দর্য উপভোগের একমাত্র যিনি হকদার ছিলেন, সেই স্বামীর ঘরে তাঁরা সবচেয়ে দীনহীন বেশে থাকতে পছন্দ করেন।

মধ্যবয়স্কা নারীরা যখন পার্লারে গিয়ে অল্পবয়স্কা তরুণী সাজতে চান, আমার মনে পড়ে একটা গল্পের কথা।

সম্রাট আকবর চুলে কলপ লাগানো শুরু করেছেন বয়স বেড়ে যাওয়ায়। একদিন অন্দরমহলে তিনি কলপ লাগাচ্ছেন, তখন বীরবল হঠাৎ ঘরে ঢুকে পড়লেন। বাদশাহ অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন আর কলমের কৌটা লুকিয়ে রাখলেন। তারপর বললেন-"ইয়ে মানে বীরবল, আচ্ছা, চুলে কলপ দিলে কি মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে?"

বীরবল মুচকি হেসে বললেন, "মহারাজ, ভয় নেই।"

- কীসের ভয় নেই?

- মস্তিষ্কের ক্ষতির ভয় নেই। কারণ যারা চুলে কলপ লাগায় তাদের আসলে মস্তিষ্ক নামক বস্তুটাই নেই। কাজেই ক্ষতি হওয়ার প্রশ্ন আসে কীভাবে?

- মস্তিষ্ক নেই মানে?

- হুজুর, মস্তিষ্ক থাকলে কি আর বাজে কাজে সময় নষ্ট করত? যে সময় চলে গেছে তাকে কি ফিরিয়ে আনা যায়? নদীর যে স্রোত চলে গিয়েছে তাকে কি আবার ফিরিয়ে আনা যায়?

বাদশাহ লজ্জিত হলেন। কিন্তু আমরা লজ্জিত হতে নারাজ। সত্যিই আমরা লোকের দেখনদারির পেছনে কতটা সময় নষ্ট করি চিন্তা করলে শিউরে উঠতে হয়। একটা পার্টিতে যেতে হলে সাজগোজের পেছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেরিয়ে যায়, অথচ কুরআনের একটা ছোট্ট সূরা বুঝতে আধঘণ্টা সময় আমাদের হয় না।

আজকালকার মা বোনেরা যে পরিমাণ সময় সিরিয়াল দেখে, সাজগোজ করে আর পরচর্চা করে কাটান, তাতে হয়তো বীরবল বেঁচে থাকলে এদের দেখেও বলতেন-"মস্তিষ্ক নামক কোন পদার্থ নেই।"

একটা গাড়ির পেছনে লেখা দেখেছি-

"Mosques are free but empty, and clubs are paid but full. It's amazing that we ignore Jannah which is free but buy Jahannam with money."

সত্যি, কতবড় মস্তিষ্কহীনই না আমরা !!

[প্রেম নয়, বিয়ে করুনঃ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করুন]

ভেবে দেখুনঃ আপনি কিসের মতো?

একজন যুবতী মহিলা একদিন তার মায়ের কাছে গিয়ে নিজের জীবন সম্পর্কে বলতে লাগলো যে তার জীবন তার জন্য কত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে বুঝে উঠতে পারছিল না কিভাবে সে সবকিছু সামলাবে, হতাশায় তার সব কিছু ছেড়েছুঁড়ে দিতে ইচ্ছে করছিল। সে সংগ্রাম করে করে ক্লান্ত। মনে হচ্ছিল যেন, একটা সমস্যা শেষ হতে না হতেই আরেকটা সমস্যা এসে হাজির হয়ে যাচ্ছে।

তার মা তাকে রান্নাঘরে নিয়ে গেল। তিনি তখন তিনটি পানি ভরা পাত্র তিনটি চুলায় গনগনে আগুনের উপর বসিয়ে দিলেন। কিছুক্ষনের মধ্যেই পাত্রগুলোর পানি ফুটতে লাগলো। প্রথম পাত্রটির ভিতর তিনি গাজর রাখলেন, দ্বিতীয়টিতে ডিম রাখলেন, আর শেষ পাত্রটিতে কিছু চা পাতা ছেড়ে দিলেন।
প্রায় বিশ মিনিট পর তিনি সবগুলো চুলার আগুন নিভিয়ে দিলেন। তারপর গাজর উঠিয়ে একটি বাটিতে রাখলেন; ডিম তুলে আরেকটি বাটিতে রাখলেন। সবশেষে চা ঢেলে কাপে রাখলেন।

মেয়ের দিকে ঘুরে তার মা প্রশ্ন করলেন, 'বল তো, তুমি কি দেখলে?'

সে উত্তর দিল, 'গাজর, ডিম আর চা'

তার মা তখন তাকে কাছে নিয়ে এসে গাজরটি হাত দিয়ে ধরে দেখতে বললেন। সে ধরে অনুভব করল যে গাজরটি নরম হয়ে গেছে।

তারপর তার মা বললেন ডিম নিয়ে ভেঙ্গে দেখতে। ডিমের খোসা খুলে সে দেখল ডিমের ভিতরে সিদ্ধ হয়ে শক্ত হয়ে গেছে।

সবশেষে, মা তার মেয়েকে চায়ে চুমুক দিতে বললেন। তার মেয়ে তখন চায়ে চুমুক দিয়ে এর ঘ্রান নিয়ে হাসল।

মেয়ে তখন মা কে প্রশ্ন করল, "এতে কি বোঝা গেল মা?"

তার মা তখন ব্যখ্যা করলেন, এই প্রত্যেকটি জিনিস একই রকম পরিস্থিতির মুখমুখি হয়েছেঃ ফুটন্ত পানি। কিন্তু একেকটির প্রতিক্রিয়া হল একেকরকম।

গাজরটি ছিল মজবুত, শক্ত, অনমনীয়। কিন্তু, ফুটন্ত পানির মধ্যে থেকে তা হয়ে গেল নরম ও দুর্বল।

ডিমটি ছিল নাজুক, ভঙ্গুর। এটির পাতলা বহিরাবরন এর ভেতরের তরল অংশটির সংরক্ষন করছিল। কিন্তু ফুটন্ত পানির তাপ এর ভেতরকে শক্ত করে ফেলল।

চায়ের বৈশিষ্ট্য ছিল সবচেয়ে ভিন্ন। ফুটন্ত পানিতে ছড়িয়ে গিয়ে এটি পানিকেই বদলে ফেলল।

মা তার মেয়েকে প্রশ্ন করলেন, 'তুমি এর কোনটির মতো?' 'যখন প্রতিকূলতা আপনার দরজায় কড়া নাড়ে, আপনি কিভাবে সাড়া দেন? গাজরের মতো, ডিমের মতো, নাকি চায়ের মতো?'

ভেবে দেখুনঃ আপনি কিসের মতো?

আপনি কি সেই গাজরের মতো যে কিনা দেখতে মজবুত, অনমনীয়; কিন্তু কষ্টে ও প্রতিকূলতায় আপনি কি নুয়ে পড়েন আর দুর্বল হয়ে যান এবং শক্তিহীন হয়ে পড়েন?

আপনি কি সেই ডিমের মতো যার অন্তর প্রথমে নমনীয় থাকে, পরে তাপে-কষ্টে পরিবর্তিত হয়ে যায়? আপনি কি চঞ্চল মনের অধিকারী ছিলাম...কিন্তু কারও মৃত্যু, কোন সম্পর্কের ছেদ, কোন আর্থিক দৈন্যতা অথবা অন্য কোন পরীক্ষায় আপনি শক্ত ও কঠোর হয়ে গেছেন?

নাকি আপনি চায়ের মতো? যা গরম পানিটিকেই বদলে দেয়, সেই পরিস্থিতিকেই বদলে ফেলে যা কষ্ট দিতে এসেছিল। চায়ের বেলায়, পানি যখন গরম হয়ে যায়, চা তখন তার সুঘ্রান ও স্বাদ আশেপাশে ছড়িয়ে দেয়। আপনি যদি চায়ের মতো হয়ে থাকেন, তাহলে যখন আপনার চারপাশের পরিস্থিতির অবনতি ঘটে, আপনার তখন আরও উৎকর্ষ সাধিত হয় এবং আপনার জন্য চারপাশের পরিস্থিতি আপনার পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তিত হয়ে যায়।

যখন অন্ধকার আচ্ছন্ন করে ফেলে আর বড় বড় পরীক্ষা আসে, আপনি কি আত্মোন্নয়নে আরেকটু এগিয়ে যান? আপনি কিভাবে প্রতিকূলতাকে সামলান?

এমন নয় যে সুখী মানুষদের সবকিছু সেরা অবস্থায় থাকে; তারা তাদের চলার পথে যার মুখোমুখি হয় তারই ভালটুকু গ্রহন করে এগিয়ে যেতে পারে। উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কিছু অতীত ভুলে যেতে হয়; যদি অতীতের ব্যর্থতার গ্লানি, হৃদয়ের ক্ষত কাটিয়ে না উঠতে পারেন আপনি জীবনে সামনে এগোতে পারবেন না।

আপনি যখন জন্মেছিলেন, আপনি কাঁদছিলেন আর আপনার আশেপাশের সবাই হাসছিল। জীবনে এমন ভাবে বাঁচুন, যেন জীবনের শেষ মুহূর্তে আপনি হাসতে পারেন আর আপনার জন্য সবাই কাঁদে।

আপনি হয়তো এই কথাগুলো তাদেরকে জানাতে চাইবেন, যারা আপনার প্রিয় (যেমনটি আমি করেছি); যারা কোন না কোনভাবে আপনার জীবনকে ছুঁয়ে গেছে; যারা আপনার মুখে হাসি ফুটিয়েছে যখন তা আপনার সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন ছিল; যারা আপনাকে কোন কিছুর ভাল দিকটি দেখিয়েছেন যখন আপনি হতাশায় ছিলেন; যাদের বন্ধুত্ব আপনার কাছে খুবই মুল্যবান; যারা আপনার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

একজন বয়স্ক মানুষকে বদলানোর চেয়ে একটি শিশুকে সঠিকভাবে গড়ে তোলা সহজ...

আমরা যেন সবাই সেই চায়ের গুনটি অর্জন করতে পারি।

[QuranerAlo.com হতে সংগৃহীত]

দ্বীনি বিষয়গুলো অনেক চমৎকার

দ্বীনি বিষয়গুলো অনেক চমৎকার।

ধরুন, আপনি জামায়াতে সালাত আদায়ের নিয়্যতে মসজিদে গেলেন। কিন্তু গিয়ে দেখলেন জামায়াত শেষ হয়ে গিয়েছে। তারপরেও আপনি জামায়াতে সালাত আদায় করার সমান সওয়াব পাবেন শুধু আপনার প্রচেষ্ঠার কারণে।

একইভাবে, আপনি দ্বীনের যে কাজটাই করুন না কেন আপনার নিয়্যত ও প্রচেষ্টার কারণে কিছু না কিছু বিনিময় আল্লাহর কাছে আশা করতে-ই পারেন। এমনকি কাজটা করতে গিয়ে আপনি ব্যর্থ হলেও আজর পাবেন ইনশা-আল্লাহ।

এবার, দুনিয়াবী কাজগুলোর কথা চিন্তা করুন।

দুনিয়াবী কাজের বিনিময় আপনি ঠিক ততটুকু-ই পাবেন যতটুকু আপনি কাজটা করবেন।যেমন ধরুন, আপনি অনেক টাকা খরচ করে একটা ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফরম কিনলেন। আরো কিছু টাকা খরচ করে গাড়িতে চড়ে ভর্তি পরীক্ষার দিন সেই ভার্সিটিতে গেলেন পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য, মাঝপথে হয়ত কোন দুর্ঘটনা বা জ্যামের কারণে আপনি সেখানে গিয়ে দেখলেন পরীক্ষার সময় শেষ। এখন আপনার আর করার কিছুই থাকবে না।

আপনার যে টাকা খরচ করলেন, যে পরিশ্রম দিলেন তার সবটুকুই ব্যর্থ। কিছুমাত্র লাভও আপনি তখন পাবেন না।

দ্বীনি আমলগুলোর আরো একটি চমৎকার বিষয় হচ্ছে, এই আমলের বিনিময়গুলো স্বয়ং আল্লাহ-তায়লা সংরক্ষণ করেন। অপরদিকে দুনিয়াবী বদলা যেমন পরীক্ষার সার্টিফিকেটগুলো কিন্তু আপনাকে-ই সংরক্ষণ করতে হবে [এ কথা দ্বারা এটা বুঝানো হচ্ছে না যে, আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ছাড়াই আপনি তা পারবেন]। আর যদি কোন কারণে এই কাগজগুলো কখনো হারিয়ে যায় তবে এক্কেবারে নাস্তানাবুদ অবস্থা।

সর্বোপরি সবচেয়ে বেশী চমৎকার বিষয় হচ্ছে, দ্বীনি কাজের যে পুরষ্কার দেওয়া হবে সেটা হল জান্নাত যার মধ্যে সুখের কোন সীমা-পরিসীমা নেই আর দুনিয়াবী কাজের যে বিনিময় পাওয়া যায় তার সুফল সবক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। আর পাওয়া গেলেও তা খুব সামান্য ও ক্ষণস্থায়ী। তাছাড়া এইসমস্ত ডিগ্রী-টাকা-পয়সা-সম্পদ কোনটাই মৃত্যুর পর কাজে আসে না।

সুতরাং,

সুসংবাদ তাদের জন্য যারা দ্বীনকে মানে, আর ক্ষতিগ্রস্থ তারা আল্লাহকে ভুলে দুনিয়ার পিছে ঘুরে।

--- ওমার ফারুক