শাশুড়ি এবং শ্বশুর বাড়ি

​​
এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে, সাধারনত মেয়েরা সবচেয়ে বেশী যে বিষয়ে গীবত করে সেটা হল শাশুড়ি এবং শ্বশুর বাড়ি। এটা যে শুধু উপমহাদেশের মেয়েদের মধ্যে বেশী তা কিন্তু নয়; বরং এটি একটি গ্লোবাল ব্যপার। কিছু কিছু মেয়ে তো রীতিমত 'mother-in-law phobia' তে ভুগে এবং তার এই ফোবিয়াকে আরও বাড়িয়ে দেয় তার আশেপাশের লোকজন। এর ফলে কোন রকম কারন ছাড়াই তারা বিয়ের পরের দিন থেকেই তার স্বামীর বাড়ির সবাইকে এবং বিশেষ করে শাশুড়িকে তার প্রতিপক্ষ মনে করে।

যে কথাটা নিজের মা বললে সে মোটেই আমলে আনতো না, সেই একই কথা শাশুড়ি বললে সে আকাশ-পাতাল এক করে ফেলে। যদি আপনার শাশুড়ির কথায় আপনি দুঃখ পান তাহলে তার সাথে ভদ্রভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করুন, তাকে আপনার কষ্টটি খুলে বলুন। তাকে প্রতিপক্ষ মনে না করে বরং নিজের মায়ের মত মনে করুন। তার সাথে সুখদুঃখের কথা বলুন। দেখবেন, সে আপনার সবচেয়ে ভালো বন্ধু হয়ে যাবে। বাইরের লোকের কাছে উনার গীবত করে কেন নিজের পাপের বোঝা বাড়াচ্ছেন? আপনি যেভাবে আপনার শাশুড়ি এবং শ্বশুর বাড়ি সম্পর্কে নেতিবাচক কথা বলে বেড়ান ঠিক সেইভাবে কি নিজের মা বা বোনের কথা আপনার বান্ধবীকে বা প্রতিবেশীকে বলেন?

আপনাকে সবসময় মনে রাখতে হবে যে আজ আপনি যে স্বামীকে নিয়ে গর্বিত তার জন্মদাত্রী হচ্ছেন আপনার শাশুড়ি। আপনার স্বামীর যতগুলো ভালো গুন রয়েছে, তার হাতেখড়ি হয়েছে এই মায়ের হাতে। আজ আপনি ডাক্তার/ ইঞ্জিনিয়ার/ ব্যারিস্টার/ বিসিএস ক্যাডার/ লইয়ার/প্রফেসার/ ইউনিভার্সিটি গ্র্যাজুয়েট/ ব্যবসায়ী এর স্ত্রী হিসাবে যে আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদা ভোগ করছেন, তার পেছনে রয়েছে এই মায়ের অনেক নির্ঘুম রাত, বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা, অনেক স্বপ্ন। আপনি যদি মা হন, তাহলে আপনার সন্তান দূরে সরে গেলে বা চোখের আড়াল হলে আপনার বুকের ভেতর যেমন দলা পাকিয়ে কষ্টভাব হয়, উনিও ঠিক তেমনি বোধ করেন যখন আপনার কূটচালের ফলে উনার ছেলে দূরে চলে যায়। আর আপনি যদি মুসলিম হন তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে "your husband's Jannah lies under her feet, not your feet"! So stay in your limit!!

-- সিফাত মাহজাবিন

এই সমাজ শিক্ষা দেয় যে নারীরা হলো সুলভ্য পণ্য

কিছু দিন আগে চিন্তা করছিলাম, মরুচারী অসভ্য একটা জনগোষ্ঠী হঠাৎ কিভাবে ঝড়ের বেগে সমস্ত পৃথিবীর প্রতিটি কোনায় কম্পন তুলেছিল, কিভাবে তারা করতে পেরেছিল অর্ধ পৃথিবীকে সাথে নিয়ে অখণ্ড সালতানাতের স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে, কিভাবে তারা তৈরি করেছিল নতুন একটা ওয়ার্ল্ড অর্ডার, বদলে দিয়েছিল মানুষের চিন্তার ডাইনামিক্স!!

অনেক অনেক অনেক কারণ খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। নারীদের প্রাপ্য যথাযথ সম্মান দেয়াও সেগুলোর একটা কারণ। কিন্তু আমাদের প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা কখনোই সেটা নিশ্চিত করতে পারবে না। কারণ এই সমাজ নারীদেরই শিক্ষা দেয় যে নারীরা হলো সুলভ্য পণ্য।

-- নাজিম উদ্দিন রাহী

পাড়ার হ্যাংলা পাতলা ছেলেটিকে জিমে দৌড়াতে হয়

পাড়ার হ্যাংলা পাতলা ছেলেটিকে জিমে দৌড়াতে হয় Six-pack abs এর আশায়, চুল কাটাতে হয় Sparrow tail রেখে, জিন্স torn না হলে ইজ্জত থাকে না, aviator সানগ্লাসটা না পড়লেও ঝুলিয়ে রাখতে হয়;

এভাবেই peer pressure এর মাধ্যমে, মিডিয়ার সর্বগ্রাসী বিপণনে আর পারিপার্শ্বিকতার চাপে গড়ে বস্তুবাদীদের lifestyle আর সাথে সাথে প্রবৃত্তিপূজার লিবারেলিজমের creed ও ঝেঁকে বসে ওই ছোট কাধে।

culture confusion এ বেড়ে উঠা এ প্রজন্মই ধীরে ধীরে সরতে থাকে মা-বাবা আর সমাজের শেখানো 'cultural assaulted' Islam এর গন্ডি থেকে।

আর মানবতাবাদী pied piper দের খপ্পরে পড়ে ছেলেরা হয় হালের ফ্যাশন pretending Atheist আর মেয়েরা হয় Feminist।

- Sayyid Mahmud Gaznabi

dampotto : দাম্পত্য ও বিয়ে নিয়ে পড়াশোনা দরকার নেই?

​আমাদের সমাজে, আমাদের অনেকের মাঝে সাধারণভাবে ভুল ধারণা প্রচলিত আছে, তার একটি হলো,
১) "বিয়ের প্রস্তুতি হিসেবে পড়াশোনা বা জ্ঞানার্জন ও চিন্তাভাবনার তেমন কিছু নেই, সময় হলেই সব এমনিতেই হয়ে যাবে।"

অপর একটি ভুল ধারণা,
২) "দাম্পত্য জীবন নিয়ে তেমন পড়াশোনা বা অন্য কোন জ্ঞানার্জনের দরকার নেই, এমনিতেই সব হয়ে যাবে।"

এই চিন্তাগুলো সঠিক নয়, বরং উচ্চমাত্রার অকার্যকর সেই বিষয়ে স্কলারদের কেউই সম্ভবত অমত করেননি কখনো; কেননা এই বিষয়গুলো জীবনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহের একটি। গাড়ি কেনার আগে, ফ্ল্যাট কেনার আগে, ড্রাইভিং শেখার আগে, ভার্সিটিতে ভর্তি হবার আগে কত খোঁজখবর আর প্রস্তুতি আমরা নিয়ে থাকি; অথচ জীবন আমাদের যে সংসার ঘিরে থাকে নিত্য -- তাকে নিয়ে শেখার কিছু নেই তা কতই না অবান্তর চিন্তা!!

আমাদের সবারই কিছু সম্পদ আছে নিজেদের মাঝে, আছে কিছু দুর্বলতাও -- সবকিছু মিলেই আমরা। নিজেদেরকে আমরা জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে আরো ভালো করে উন্নত করতে পারি মানসিকভাবে -- নিজেদের চিন্তাগুলোকে, আচার-আচরণগুলোকে মার্জিত, সুন্দর করে পরিস্ফূটনের ব্যবস্থা করতে পারি। একটু খেয়াল করলে দু'জনের মতবিরোধ হতে পারে সহনশীল মতপার্থক্য, একটু সচেতন হলেই দু'জনের ভিন্নতা হতে পারে অপরজনকে ভালোবাসার নতুন একটি মওকা।

পানি যতই পরিষ্কার থাকুক, একটি পাত্রে বদ্ধ রেখে দিলে তা বছরখানেক পরে অপরিষ্কার হয়ে যায়, তাতে নানান জীবাণু হাজির হয়। কিন্তু বহমান নদীতে কিছু ময়লা থাকলেও তা জমে থাকে না, স্রোতের সাথে সরে যায় দূরে। জীবনের সাথেও এর মিল রয়েছে, দাম্পত্য জীবনে এবং ব্যক্তি জীবনে আমাদের মনের চিন্তা ও জ্ঞান যত বেশিই থাকুক, তাকে বদ্ধ করে রাখলে তা ভালো ফল বয়ে আনে না আমাদের জন্য। দরকার লেগে থাকা, প্রতিদিনই একটু একটু করে হলেও নিজেকে উন্নত করা।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদের সবাইকে সরল-সঠিক পথে চলার তাওফিক দিন। আল্লাহ আমাদেরকে উত্তম জ্ঞান দান করুন যা আমাদের দুনিয়া এবং আখিরাতের জন্য কল্যাণকর। আল্লাহ আমাদের এমন জ্ঞান থেকে বিরত থাকার তাওফিক দিন যা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য অর্থহীন ও অকল্যাণকর।

পরপুরুষকে ভাই, বেগানা নারীকে বোন বানানোর ভয়ংকর কালচার

​পরপুরুষকে ভাই, বেগানা নারীকে বোন বানানোর ভয়ংকর সংস্কৃতি

হারামকে লাইসেন্স দেয়ার জন্য মানুষের বাচ্চার মাথায় চালাকির অন্ত নেই! আল্লাহ বললেন, বেগানা নারী ও পরপুরুষের থেকে দূরে থাকতে। কিন্তু মানুষ শয়তানের থেকে (কু)বুদ্ধি নিয়ে বেগানা নারীকে বানায় "বোন", পরপুরুষকে বানায় "ভাই"। স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটির সেই ঐতিহ্যের কথা নিশ্চয়ই সবার জানা আছে! "অমুক তো আমার ছেলে লাগে", "তমুক আমার মেয়ে হয়"। বাবা, দাদা, মা, নানী আরও কতপদের ডাক শুনলাম, ডেকে কি করা হয় তাও দেখলাম! এও হয়েছে বাবা ডাকা ছেলের সাথেই শেষমেষ প্রেম করে বিয়ে। তাই বলি কি, এইসব ডাকে সম্মান নেই, ক্ষুধার্ত নোংরা মনের লোভাতুর হাতছানি আছে মাত্র। শব্দের আড়ালে সেই লোভকে ধামাচাপা দিলেই মনটা পরিষ্কার হয়ে যায় না।

-- আনিকা ওয়ারদা তুবা

আমি কবে বড় হবো?

"আমি কবে বড় হবো?"

"কেন? বড় হলে কী হবে??"

"সাজুগুজু করবো।"

কথাটা চাইলে এখানেই শেষ করে দেয়া যায়। পাঁচ বছরের বাচ্চার বলা কথা, বাড়িয়ে লাভ?! কিন্তু, এই কথাচ্ছলে যদি ওকে আরও দুইটা বিষয় শিখিয়ে দেয়া যায়, হয়ত কথাগুলো মনের মাঝে দৃঢ় হয়ে বসবে। ইনশাআল্লাহ।

এক্ষেত্রে বাচ্চাকে বলা যায় "এটা কেমন কথা!" বা "এমন ভাবতে নেই।" তাহলে এরপরের বার হয়ত আর নিজের মনের ভাবনাটা বলবে না খুলে। কিন্তু যেই দুইটা বিষয় ওকে আমি বুঝাতে চাইছি, সেগুলো তো অনেক সিরিয়াস বিষয়-- ওকে শোনাবো কিভাবে?? তখন জিজ্ঞেস করলাম, আমাদের কে বানিয়েছেন? বলল, আল্লাহ! কেন বানিয়েছেন? এখানে কিন্তু চুপ করে গেল। এই কেন তার জানা নেই। তবে কেবল বড় হয়ে "সাজুগুজু" করার জন্য বানিয়েছেন সেটাও মনেহয় ভাবতে পারলো না।

তখন তাকে বললাম, বড় হলে সাজতে তো পারবেই ইনশাআল্লাহ, তবে মুসলিমের জীবনে সাজা ছাড়াও আরও অনেক কাজ আছে, তাই না? নামায পড়া, রোজা রাখা, হিফজ করা, আল্লাহর কথা শোনা, অন্যকে বলা, বড়দের হেল্প করা... ছোটদের খেয়াল রাখা... আল্লাহ আমাদের বানিয়েছেন আল্লাহর ইবাদত করার জন্য। এর ফাঁকে ফাঁকে ইনশাআল্লাহ সাজবে, ছবি আঁকবে, যা কিছু আল্লাহ করতে পারমিশান দিয়েছেন সবই করবে!

বুঝলো। কিন্তু আরেকটা বিষয় যে বাকি? আচ্ছা মা, সাজগোজ কিভাবে করবা? "লিপ্সটিক, নেল পালিশ, ক্লিপ দিয়ে সাজবো। গুটায় গুটায় (বেণী) চুল বাঁধবো!" সেজে কি বাইরে যাবা? "বাইরের মানুষের সামনে কি সাজতে হয় যে সেজে বাইরে যাবো??" বোকার মত প্রশ্ন করার কারণে ধমক খেয়ে আর কথা বাড়ালাম না!

এই যে কথোপকথন, এখানে এমন কিছু আসেনি যা বলতে আমার বিশেষ কোনও জ্ঞান থাকার প্রয়োজন ছিল। এমন কোনও বিষয় উঠে আসেনি যার জন্য আলাদা করে মেয়ের ক্লাস নিতে হবে। আলাদা করে বলার চেয়ে বেশী কাজে দেয় খেলাচ্ছলে বা গল্প কথার মাধ্যমে কিছু বললে। তাহলে এমন ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী কোন জিনিসটার প্রয়োজন??

বাবা মায়ের সময়ের। তাঁদের মনোযোগের। এবং অনেক বেশী communication এর! বুঝতে হবে। সময় সবসময়ই অমূল্য। কিন্তু সন্তানকে দেয়া বাবা মায়ের সময়, মনোযোগ এসবকে অমূল্য বললেও কম বলা হবে!!

-- নায়লা নুযহাত