সুন্দরী মেয়েটা ছেলেটার পায়ে ধরে বসে পড়লো মাটিতে

সুন্দরী মেয়েটা ছেলেটার পায়ে ধরে বসে পড়লো মাটিতে- প্লিজ তুমি আমাকে বিয়ে করো, নাহলে আমার বিষ খাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবেনা।

সোহরাওয়ারদি উদ্যানের আপামর জনতা বসে বসে মজা লুটছিল। আর মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে মূর্ছা যাওয়ার দশা। ছেলেটাও দেখতে সিগারেট খোর ঠেকছে। পাবলিক ভাবছে- কোন কপালে এই সুন্দরী এই ছেলেকে ভালো বেসেছিল।


যুগটাই আসলে এমন। ভালোবাসা নামক সম্পর্কগুলো এখন খুব সস্তা, যত্রতত্র প্রথম দেখা, মিষ্টি হাসি দেখেই ভালোবাসা তৈরি হয়। যদিও পরে মানসিকতার দ্বন্দ্ব, সামাজিক , পারিবারিক প্রেক্ষাপটের অশান্তি, অর্থনৈতিক সমস্যায় ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালায়। আর বিয়ের আগে সব উজাড় করে দেওয়া নারী সম্প্রদায় ও জানে না আদৌ সে ছেলেটির সাথেই সংসার পাততে পারবে কিনা, কিংবা এই ছেলেটাই পরে তাকে গ্রহন করবে কিনা।


শুধু পার্কেই নয়, সুফিয়া কামাল হলের সামনেও উচ্চ শিক্ষিত মেয়েদেরও এই ধরনের অকাল কুষ্মাণ্ডদের সামনে দাড়িয়ে অরণ্যে রোদন করতে দেখেছি। অবাক লেগেছে। কিন্তু , বাস্তবতা এটাই যে, শিক্ষিত অশিক্ষিত সব নির্বিশেষে মেয়েরা এখনো এক যায়গায়ই দাড়িয়ে আছে। তা হলো নিজের সম্মান বা মর্যাদাকে নিজেরাই ভুলন্থিত করে । শুধু ছেলেদের শ্রেণী ভেদ কিংবা সামাজিক মর্যাদা এক্ষেত্রে হয়তো পার্থক্য করে।
তাই এই ধরনের সাময়িক সম্পর্কগুলো থেকে মেয়েরা আসলে নিজেদের প্রাপ্য মর্যাদা এবং অধিকারই বঞ্চিত হয়, এবং হয়ে আসছে অনাদি কাল থেকেই।


নিকাহ আরবি শব্দ এর একটা অর্থ হয় ইহসান করা, আরেকটা অর্থ হয় সুরক্ষিত দুর্গ নির্মাণ। বিয়ে সেই দুর্গ বলেই হয়তো ইসলামে বিয়ের আরবি প্রতি শব্দটা নিকাহ। আর এই ইহসান থেকেই সূচনা হয় অধিকারবোধ এবং অধিকার আদায়ের।

আর যে সম্পর্কে ইহসান নয়, সামাজিক সম্মান নয়, শুধু নারী দেহ ভোগই মুখ্য, সেই সম্পর্কে অধিকার বোধ আসার প্রশ্নই আসেনা।


আর ম্যানেজম্যান্টের ভাষায় বললে- ডিমান্ড সাইড যতো শক্তিশালী হয়, সাপ্লাই সাইড সেই অনুযায়ী সাপ্লাই করতে বাধ্য হয়। পুরোটা না দিতে না পারলেও কিছু তো দেওয়ার চেষ্টা করবে।
যেখানে মেয়েদের চাওয়াই নেই নিজের সম্মানের, মর্যাদার, সেখানে এইসব সুবিধাবাদী, ভোগবাদী পুরুষ সমাজের কোন প্রয়োজন কি আছে সেধে সেধে অধিকার দিতে যাওয়ার?


হাজার হোক, মুফতে পেলে তো বাঙ্গালী আলকাতরা ও গায়ে মাখে, তাই না? আর নারী তো এরচেয়ে হাজার গুণ লভনীয় জিনিষ। যাকে কেন্দ্র করেই ঘুরছে জগতের সব চাওয়া পাওয়ার বৃত্তগুলো। তাদের যদি এতো সহজে পাওয়া যায় নিকাহ নামের ইহসানের দুর্গ তৈরি করবে ভোগবাদী স্বার্থপর পুরুষরা, এটা ভাবাই তো সময় নষ্ট। আর যে নারী নিজেও জানে সে নির্যাতিত সম্প্রদায়ের অধিকারী, বলে কয়ে ঢাক ঢোল পেটানো সামাজিক বৈবাহিক সম্পর্কেই যেখানে সে প্রাপ্যগুলো বুঝে নিতে পারেনা, ১০ জন মুরুব্বী কিংবা নিজের বাবার মীমাংসা সত্ত্বেও সেখানে নিজে নিজে সবার আড়ালে একটা অপকর্ম করে তার অধিকার চাইতে গেলেই অধিকার পাওয়া যাবে এই ধারনাটাই তো যুক্তিহীন অসাড়। হাজার হোক, যে নিজেই নিজের সম্মান করতে জানে না,অন্যরা তাকে সম্মান কীভাবে করবে?

------ শেখ সাফওয়ানা জেরিন

No comments:

Post a Comment