ঢাকার মসজিদগুলোতে কি যেন নাই অথচ গ্রামের মসজিদগুলোতে কি যেন আছে

মাস চারেক আগের রাত ১১:৪৫, গাবতলী
.
এশার নামাজ পড়তে গেলাম এক মসজিদে। দেখি ভিতরে তালা দিয়ে মুয়াজ্জিন ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি খুলতে বললাম। সে খুলবে না, মসজিদ কমিটির আদেশ। আমি ঘাড়তেড়া গোছের , তিনিও কম যাননা। শেষমেশ তালা খুলিয়ে নামাজ পড়ে তারপর বের হলাম।
.
ঢাকার মসজিদগুলোতে কি যেন নাই। আছে কমিটি, টাইলস, এসি, ঝাড়বাতি, এয়ার ফ্রেশনার। ঘড়ির কাটার সাথে ছুটন্ত প্রতিদিনে পাঁচবার হাতের কাছে যে মসজিদ পাই, সেখানেই লাব্বায়েক বলে আসি।
.
.
অথচ গ্রামের মসজিদগুলোতে কি যেন আছে। টাইলস নাই, ঠান্ডা শানের বারান্দার উপর সকালের চিকচিকে রোদ আসে, চিৎকার করে মক্তবের পিচ্চিগুলা আমপারা পড়ে। চাপকল চেপে বদনা দিয়ে অযু করে সবাই। ইমাম সাহেব আর মুয়াজ্জিন এর চেহারাটা যেন কতকালের আপন। এসি নাই, কাঠের খড়খড়ি আর বড় জানালা দিয়ে বেশ বাতাস আসে। প্রতিটা ওয়াক্ত যেন একেকটা ছোটখাট সম্মেলন কেন্দ্র। একটা চেনা মুখ বেশ কয়দিন না আসলেই উদ্বেগ গলায় নিয়ে খোজ নিবেই কেউ। কারেন্ট চলে গেলে জেনারেটর নাই, মোমের আলোয় প্রার্থনাটা আরো বেশী আকুল হয়। শীতের রাতে একটানা ঝিঁঝিঁ ডাক ঢাকায় আমি পাইনি। ছোটকালে জুম্মার পর নানার ফেরার অপেক্ষায় থাকতাম, নানার পকেটে বাতাসা আছে তো ??
স্মৃতির ডালি খুলে বসার জন্য একটা মসজিদ যথেষ্ট

-- আহমেদ তাকী

No comments:

Post a Comment