আমাদের সমাজে আজকালকার বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোর মত বড় ফিতনা বোধহয় দ্বিতীয়টি নেই

আমাদের সমাজে আজকালকার বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোর মত বড় ফিতনা বোধহয় দ্বিতীয়টি নেই। হিন্দু কালচারের মত "গায়ে হলুদ" জাতীয় অর্থহীন আচার থেকে শুরু করে গানবাজনা, ফ্রি মিক্সিং-কিছুই বাদ নেই। নারীরা যেন তাদের সমস্ত রূপ যৌবন নিয়ে ধরা দিতে চান এসব অনুষ্ঠানে। শুধু বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য পার্লারে যেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে সাজগোজ আর টাকার শ্রাদ্ধ-এসব এখন খুবই কমন ব্যাপার। অথচ এই নারীদের সৌন্দর্য উপভোগের একমাত্র যিনি হকদার ছিলেন, সেই স্বামীর ঘরে তাঁরা সবচেয়ে দীনহীন বেশে থাকতে পছন্দ করেন।

মধ্যবয়স্কা নারীরা যখন পার্লারে গিয়ে অল্পবয়স্কা তরুণী সাজতে চান, আমার মনে পড়ে একটা গল্পের কথা।

সম্রাট আকবর চুলে কলপ লাগানো শুরু করেছেন বয়স বেড়ে যাওয়ায়। একদিন অন্দরমহলে তিনি কলপ লাগাচ্ছেন, তখন বীরবল হঠাৎ ঘরে ঢুকে পড়লেন। বাদশাহ অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন আর কলমের কৌটা লুকিয়ে রাখলেন। তারপর বললেন-"ইয়ে মানে বীরবল, আচ্ছা, চুলে কলপ দিলে কি মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে?"

বীরবল মুচকি হেসে বললেন, "মহারাজ, ভয় নেই।"

- কীসের ভয় নেই?

- মস্তিষ্কের ক্ষতির ভয় নেই। কারণ যারা চুলে কলপ লাগায় তাদের আসলে মস্তিষ্ক নামক বস্তুটাই নেই। কাজেই ক্ষতি হওয়ার প্রশ্ন আসে কীভাবে?

- মস্তিষ্ক নেই মানে?

- হুজুর, মস্তিষ্ক থাকলে কি আর বাজে কাজে সময় নষ্ট করত? যে সময় চলে গেছে তাকে কি ফিরিয়ে আনা যায়? নদীর যে স্রোত চলে গিয়েছে তাকে কি আবার ফিরিয়ে আনা যায়?

বাদশাহ লজ্জিত হলেন। কিন্তু আমরা লজ্জিত হতে নারাজ। সত্যিই আমরা লোকের দেখনদারির পেছনে কতটা সময় নষ্ট করি চিন্তা করলে শিউরে উঠতে হয়। একটা পার্টিতে যেতে হলে সাজগোজের পেছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেরিয়ে যায়, অথচ কুরআনের একটা ছোট্ট সূরা বুঝতে আধঘণ্টা সময় আমাদের হয় না।

আজকালকার মা বোনেরা যে পরিমাণ সময় সিরিয়াল দেখে, সাজগোজ করে আর পরচর্চা করে কাটান, তাতে হয়তো বীরবল বেঁচে থাকলে এদের দেখেও বলতেন-"মস্তিষ্ক নামক কোন পদার্থ নেই।"

একটা গাড়ির পেছনে লেখা দেখেছি-

"Mosques are free but empty, and clubs are paid but full. It's amazing that we ignore Jannah which is free but buy Jahannam with money."

সত্যি, কতবড় মস্তিষ্কহীনই না আমরা !!

[প্রেম নয়, বিয়ে করুনঃ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করুন]

No comments:

Post a Comment